Bihar Polls 25: বিহারে আসন জট! সব শরিককে তুষ্ট করার সমীকরণ খুঁজছে মহাজোট

People's Reporter: বিহারের যুযুধান দুই শিবির এনডিএ এবং মহাজোটবন্ধন আসন রফা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।
সম্প্রতি বিহারে হওয়া ভোটার অধিকার যাত্রায় তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, রাহুল গান্ধী
সম্প্রতি বিহারে হওয়া ভোটার অধিকার যাত্রায় তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, রাহুল গান্ধীফাইল ছবি - আইএনসি এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত
Published on

আগামী ২২ শে নভেম্বরের মধ্যে বিহারের নির্বাচন পর্ব শেষ করতে হবে। সেই হিসেবে হাতে সময় ২ মাসেরও কম। যদিও এখনও পর্যন্ত বিহারের নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। যদিও অসমর্থিত সূত্র অনুসারে অক্টোবরের শেষ থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিহারের ভোটগ্রহণ পর্ব। এখন চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিহারের যুযুধান দুই শিবির এনডিএ এবং মহাজোটবন্ধন আসন রফা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। কারণ দুই শিবিরেই একাধিক রাজনৈতিক দল যত সংখ্যক আসনের দাবি জানিয়েছে তা সামাল দিয়ে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে সময় লাগবে।

এক্ষেত্রে এনডিএ শিবিরে যেমন এলজেপি (রাম বিলাস)-এর কারণে সমস্যা হতে পারে অন্যদিকে মহাজোট শিবিরে ভিআইপি, সিপিআইএমএল-এর দাবি নিয়েও সমস্যা হতে পারে। যদিও রাজনৈতিক মহলের সূত্র অনুসারে, ২০২০ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বেশ কিছু আসন ছেড়ে দিয়ে নতুন জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আসন ভাগ বাঁটোয়ারা চূড়ান্ত করতে চাইছে আরজেডি ও কংগ্রেস। বিরোধী ভোট ভাগ না করে তা একজায়গায় নিয়ে আসাই এই মুহূর্তে মহাজোটের লক্ষ্য।

২০২০ বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি লড়াই করেছিল ১৪৪ আসনে এবং কংগ্রেস লড়েছিল ৭০ আসনে। এছাড়াও সিপিআইএমএল ১৯ আসনে, সিপিআই ৬ আসনে এবং সিপিআইএম ৪ আসনে লড়াই করেছিল। সেবার মহাজোটে ছিল না ভিআইপি। ছিল না জেএমএম এবং এলজেপি (পারস)। অর্থাৎ নিজেদের পুরোনো জোটসঙ্গী ছাড়াও এবার মহাজোটকে আসন ছাড়তে হবে নতুন তিন জোটসঙ্গীকে। যাদের মধ্যে ভিআইপি-র দাবি বেশি আসন।

মহাজোটের অন্যতম প্রধান শরিক সিপিআইএমএল গত বিধানসভা নির্বাচনে ১৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১২ আসনে জয়ী হয়েছিল। গতবারেই ৩০ আসনের দাবি জানিয়েও ১৯ আসনেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল এমএলকে। যদিও এবার আগে থেকেই সিপিআইএমএল সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁরা অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। যদিও চূড়ান্ত আসন ভাগাভাগিতে আদৌ এমএল ৪০-৪৫ আসন পাবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

কংগ্রেস গতবার ৭০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জয়ী হয়েছিল মাত্র ১৯ আসনে। যার দিকে ইঙ্গিত করতে ছাড়েননি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর মতে গতবারের স্ট্রাইক রেট অনুসারে এবার আসন বন্টন করা উচিত। তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্ট। গতবার ১৯ আসনে লড়াই করে ১২ আসনে জয়ী হওয়া এমএল-এর স্ট্রাইক রেট নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের থেকে অনেক বেশি।

যদিও বিহারের সাম্প্রতিক ভোটার অধিকার যাত্রার পর কংগ্রেসের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়েছে। যেভাবে সাধারণ মানুষ পথে নেমে রাহুল গান্ধীর ভোটার অধিকার যাত্রাকে সফল করেছেন এবং বিরোধীদের তোলা ‘ভোট চোর গদ্দি ছোড়’ শ্লোগান বিহার জুড়ে সাড়া জাগিয়েছে তাতে আশাবাদী কংগ্রেস। ফলে ৭০ আসন থেকে তাদের কতটা নামানো যাবে স্পষ্ট নয়।

কংগ্রেসের নিজেদের দলের মধ্যেও আসন নিয়ে প্রশ্ন আছে। একদিকে হাইকমান্ড চাইছে গতবারের সব বিধায়ককে মনোনয়ন দিতে। যা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসের এক গোষ্ঠী রাজী নয়। তাদের মতে, যারা যোগ্য শুধু তাঁদেরই প্রার্থী করা হোক। ইতিমধ্যেই এই মনোমালিন্যের জেরে দলের সাংসদ তারিক আনোয়ার দলীয় স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকে অনুপস্থিত থেকেছেন। এক এক্স বার্তায় তিনি লিখেছেন, আশা করা যায় এবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সৎ, একনিষ্ঠ এবং তৃণমূল স্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন ব্যক্তিদেরই প্রার্থী করা হবে।   

তবে বিভিন্ন সূত্র অনুসারে, ইতিমধ্যেই আরজেডি এবং কংগ্রেসের মধ্যে প্রাথমিক সমঝোতায় ঠিক হয়েছে অন্যান্য জোটসঙ্গীদের সামলাতে দু’পক্ষই নিজেদের কোটার আসন ছেড়ে দিয়ে অন্য শরিকদের জন্য আসনের ব্যবস্থা করবে। যদিও শেষ পর্যন্ত এই ভাগাভাগি সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

সমস্যা আছে মুকেশ সাহানির বিকাশশীল ইনসান পার্টি বা ভিআইপি-কে নিয়েও। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রথমদিকে মহাজোটের সঙ্গে থাকলেও শেষ মুহূর্তে মনোমত সংখ্যায় আসন না পাওয়ায় তিনি গিয়ে এনডিএ শিবিরে যোগ দেন এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এনডিএ শিবির থেকে ভিআইপিকে ১১ আসন ছাড়া হলেও তারা মাত্র ৪ আসনে জয়ী হন। এবার মুকেশ সাহানীর দাবি তাঁদের ৬০ আসন দিতে হবে এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দিতে হবে। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে এই দুই দাবির কোনোটাই বাস্তবসম্মত নয়। সেক্ষেত্রে মুকেশ সাহানি কত আসনে তুষ্ট হবেন তা সময় বলবে।

আরজেডি যদি ১৪৪ থেকে ১৩৫-এ নামে এবং কংগ্রেস যদি ৭০ থেকে ৬০ আসনে নামে সেক্ষেত্রে ১৯টি আসন অতিরিক্ত হয়। যে আসনের মধ্যে থেকে ভাগাভাগি করলেও সিপিআইএমএল-কে ৪০ আসন দেওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ আসন বন্টন নিয়ে মহাজোটে শেষ মুহূর্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হবে তা এখন থেকেই বলা যায়।

আরজেডি যদি ১৩৫ আসনে লড়ে এবং কংগ্রেস ৬০, সেক্ষেত্রে বাকি থাকে ৪৮ আসন। ৪৮ আসনের মধ্যে ২৫ আসন সিপিআইএমএল-কে ছাড়া হলে বাকি থাকে ২৩ আসন। সিপিআই ও সিপিআইএম-কে গতবারের মত ১০ আসন ছাড়া হলে বাকি থাকে ১৩ আসন। এক্ষেত্রে ভিআইপিকে ১১ আসন ছাড়া হলে বাকি ১টি করে আসন জেএমএম এবং এলজেপি (পারস)-কে দেওয়া হতে পারে। যদিও কীভাবে এই আসন বন্টন সূত্র বেরোবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে ভোটের আগেই সব শরিককে তুষ্ট করে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী ময়দানে লড়তে নামাই এখন মহাজোটের কাছে সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ।

সম্প্রতি বিহারে হওয়া ভোটার অধিকার যাত্রায় তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, রাহুল গান্ধী
Bihar Polls 25: হয় প্রথম নয় শেষ - মাঝামাঝি কিছু নেই - জন সূরজ পার্টি নিয়ে আর কী জানালেন পিকে?
সম্প্রতি বিহারে হওয়া ভোটার অধিকার যাত্রায় তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, রাহুল গান্ধী
Bihar Polls 25: স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে ৪৭০ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে কমিশন

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in