কোনোভাবেই মানানো সম্ভব হচ্ছে না এলজেপি (রামবিলাস) নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানকে। একসময় নিজেকে ‘প্রধানমন্ত্রীর হনুমান’ বলে দাবি করা চিরাগ পাসোয়ানের আসনের দাবিতে অস্বস্তি বাড়ছে এনডিএ শিবিরে। আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কমপক্ষে ৪০ আসন দাবি করেছেন তিনি। গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে বৈঠক করলেও আর তিনি বৈঠকে বসবেন না বলে জানিয়েছেন এবং আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছেন নিজের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও দলীয় নেতা অরুণ ভারতীকে।
লোকসভা নির্বাচনে ৫ টি আসনে জয়লাভ করার পর থেকেই বিধানসভা নির্বাচনে সর্বাধিক ৫৪, সর্বনিম্ন ৪৫ আসনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন চিরাগ পাসোয়ান। যদিও এনডিএ শিবিরের অন্যান্য দলকে দাবি মত আসন দিতে গেলে চিরাগকে এই সংখ্যক আসন দেওয়া সম্ভব নয়। গতকালের বৈঠকেও তাঁকে ২৫টি আসন দেবার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যাতে সম্মত হননি এলজেপি নেতা। গতকালের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলেই বেরিয়ে যান।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বার বার ‘আবকি বারি, জুবা বিহারী’ শ্লোগান তোলা চিরাগ প্রথম থেকেই জানিয়েছিলেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার নন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁর বেশি সংখ্যায় আসন চাই। এই প্রসঙ্গে তিনি লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দলের ফলের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
আসন নিয়ে এই টানাপোড়েনের মাঝেই বুধবার সকালে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্ট সকলের নজর কেড়েছে। যেখানে তিনি তাঁর প্রয়াত পিতা রামবিলাস পাসোয়ানের ছবি দিয়ে লিখেছেন, “বাবা সবসময় বলতেন, অন্যায় কোরো না, অন্যায় সহ্য কোরো না, বাঁচতে গেলে মরতে শেখো, প্রতি পদক্ষেপে লড়তে শেখো।” বুধবার সকালে তাঁর করা এই ট্যুইট নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এর আগে চিরাগ জানিয়েছিলেন, দাবী মত আসন না পেলে তিনি এককভাবেও লড়াই করতে পারেন। যে জল্পনা আরও উসকেছে গতকাল থেকে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনে। যেখানে বলা হচ্ছে, প্রশান্ত কিশোরের জন সূরজ পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে তিনি আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে এনডিএ বড়ো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
২০২০ বিধানসভা নির্বাচনেও চিরাগ পাসোয়ানের দল একক শক্তিতে লড়াই করেছিল। সেবার বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিলেও জেডিইউ-এর বিরুদ্ধে প্রতিটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল এলজেপি (রামবিলাস)। ১৩৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেবার চিরাগ পাসোয়ানের দল জয়ী হয় ১টি আসনে। যদিও তাঁর কড়া বিরোধিতার মুখে পড়ে সেবার জেডিইউ-এর আসন সংখ্যা নেমে আসে ৪৩-এ।
এনডিএ শিবিরের সূত্র অনুসারে ১০২ আসনে লড়াই করতে পারে জেডিইউ এবং ১০১ আসনে লড়াই করতে পারে বিজেপি। চিরাগ পাসোয়ানকে ২৪ অথবা ২৫ আসন, জিতন রাম মাঝিকে ৮ থেকে ১০ আসনে এবং উপেন্দ্র কুশহাওয়াকে ৭ আসন ছাড়া হতে পারে। যদিও বুধবার জিতন রাম মাঝি জানিয়েছেন, কমপক্ষে ১৫ আসন না পেলে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন