
বৃহস্পতিবার দুপুরে আমেদাবাদের মেঘানীনগরে বহুতলের উপর ভেঙে পড়ে ইয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। বিমানটিতে যাত্রী এবং ক্রু মেম্বার মিলিয়ে ২৪২ জন ছিলেন। জানা গেছে, উড়ানের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। বিমানটি ভেঙে পড়ার আগে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে বিপদাবার্তা (মে ডে কল) পাঠিয়েছিলেন পাইলট। সিভিল এভিয়েশন ডিরেক্টরেট জেনারেল (ডিজিসিএ) অনুসারে, পাইলট সুমিত সাভারওয়ালের কাছ থেকে বিপদবার্তা পেয়ে এটিসি যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি। সূত্রের খবর, এরপরেই দুর্ঘটনার খবর মেলে।
কী এই মে ডে কল?
আন্তর্জাতিকভাবে বিমানের পরিভাষায় এই 'মে ডে কল' হল বিপদ সংকেত। মূলত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পাইলট কোনও বিপদের আশঙ্কা পেলে, এটি ব্যবহার করেন। ফরাসি শব্দ 'মাইডার' থেকে এটির উৎপত্তি, যার অর্থ 'আমাকে সাহায্য করুন'।
সাধারণত এটিসি এবং ওই এটিসি-র আওতায় থাকা আকাশপথে কোনও বিমানের মধ্যে রেডিয়ো যোগাযোগকে ‘মে ডে কল’ বলে।
১৯২০ সালে এটি প্রথম চালু হয়েছিল। এই শব্দবন্ধটি অন্তত তিন বার বলতে হয় ‘মে ডে, মে ডে, মে ডে’। তবেই এটিসি বুঝতে পারে সত্যিই বিমান কোনও বিপদে পড়েছে।
কে মে ডে কল জারি করেন?
সাধারণত পাইলটরা জরুরি অবস্থায় এই 'মে ডে কল' শব্দবন্ধটি ব্যবহার করতে পারেন। বিমানের ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দিলে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বিমান পড়লে, বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ হলে এবং উড়ানপথে বিমানের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ায় মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি তৈরি হলে এই ‘মে ডে কল’ করা হয়ে থাকে। তবে পরিস্থিতি যদি খুব গুরুতর না হয়, কিন্তু বিষয়টি উদ্বেগজনক, এ রকম পরিস্থিতিতে ‘প্যান প্যান কল’ করেন পাইলট।
মে ডে কলের পরে কী ঘটে?
মে ডে ঘোষণার পরে, সেই ফ্রিকোয়েন্সিতে সমস্ত রেডিও ট্র্যাফিক পরিষ্কার হয়ে যায়। বিপদে থাকা ব্যক্তি তাদের অবস্থান, জরুরি অবস্থার প্রকৃতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ ভাগ করে নেন। এরপর এটিসি বা জরুরি পরিষেবাগুলি উদ্ধারের দায়িত্ব নেয়।
এই ঘটনায় বিমানে থাকা সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া বিমানটি যে বহুতলের উপর ভেঙে পড়ে সেটি মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের হস্টেল ছিল। সেই সময় পড়ুয়াদের লাঞ্চ টাইম চলছিল। এই ঘটনায় ৫ পড়ুয়ারও মৃত্যু হয়েছে।
বিমান দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদী। এক্স-এ তিনি লিখেছেন, ‘‘অহমদাবাদের ট্র্যাজেডি আমাদের হতচকিত করেছে, দুঃখ দিয়েছে। এতটাই হৃদয়বিদারক যে, ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। যাঁরা এই দুর্ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত, তাঁদের সকলের জন্য আমি সমব্যথী। যাঁরা আক্রান্তদের সাহায্য করছেন, সেই মন্ত্রী এবং প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।’’
ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন