
২০২৫-এ রসায়নে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন তিন বিজ্ঞানী। এঁরা হলেন — জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া (কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়), অস্ট্রেলিয়ার রিচার্ড রবসন (মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওমর এম. ইয়াঘি (ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে)। তাঁরা সম্মানিত হয়েছেন ‘ধাতু-জৈব কাঠামোর উন্নয়নের জন্য’ (MOF), যা আধুনিক রসায়নকে নতুন দিগন্তে নিয়ে গিয়েছে।
বুধবার সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করে। পুরস্কারপ্রাপকরা বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম সম্মানজনক স্বীকৃতির মর্যাদা ভাগের পাশাপাশি, পুরষ্কারমূল্য হিসেবে পাওয়া ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনারও (প্রায় ১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবেন।
রসায়ন সংক্রান্ত নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হেইনার লিঙ্কে বলেন, “তাঁরা এমন উপাদান তৈরি করেছেন যার ভিতরে অসংখ্য ক্ষুদ্র গহ্বর বা ফাঁকা জায়গা রয়েছে, যা প্রায় একটা হোটেল ঘরের সমান। এই গহ্বরগুলিতে নানা অণু প্রবেশ ও নির্গমন করতে পারে।” এরপরেই মজার তুলনা টেনে তিনি আরও বলেন, “এই উপাদানগুলো যেন হ্যারি পটারের হারমায়োনির ব্যাগের মতো। ছোট একটি অংশেই বিপুল পরিমাণ গ্যাস ধারণ করতে পারে।”
এই তিন বিজ্ঞানী এমন বিশাল আণবিক কাঠামো তৈরিতে কাজ করেছেন যার মধ্য দিয়ে গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ প্রবাহিত হতে পারে। যা মরুভূমির বাতাস থেকে জল সংগ্রহ, কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ এবং বিষাক্ত গ্যাস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
একাডেমির বিবৃতিতে বলা হয়, “ধাতু-জৈব কাঠামোর উন্নয়নের মাধ্যমে, রসায়নবিদদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছেন কিতাগাওয়া, রবসন এবং ইয়াঘি। তাঁদের উদ্ভাবন বর্তমান বিশ্বের একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক।”
প্রতি বছর অক্টোবরের শুরুতে ঘোষিত হয় নোবেল পুরস্কার প্রাপকদের নাম। প্রতিদিন একটি করে বিষয়ে প্রাপকদের নাম ঘোষিত হয়। চিকিৎসা ও পদার্থবিজ্ঞানের পর রসায়নে প্রাপকদের নাম ঘোষণার এই ঐতিহ্যও শতাব্দীপ্রাচীন। আলফ্রেড নোবেল, যিনি ছিলেন একজন উদ্ভাবক ও রসায়নবিদ, তাঁরই উইল অনুযায়ী ১৯০১ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।
যুদ্ধকালীন সময় বাদে নিয়মিতভাবে দেওয়া এই পুরস্কার বিজ্ঞানের ইতিহাসে অসংখ্য মাইলফলক চিহ্নিত করেছে — যেমন নিউক্লিয়ার ফিশন, ডিএনএ সিকোয়েন্সিং এবং ইস্ট কোষ নিয়ে গবেষণা।
২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পেয়েছিলেন ডেভিড বেকার, জন জাম্পার এবং ডেমিস হাসাবিস। প্রোটিনের গঠন উন্মোচন ও নতুন প্রোটিন নিয়ে কাজে স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁদের নোবেল দেওয়া হয়। তাঁদের কাজ ওষুধ উন্নয়ন থেকে শুরু করে জীবপ্রযুক্তিতে নতুন যুগের সূচনা করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন