

কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালো কর্ণাটক রাজ্য আইটি/আইটিএস কর্মচারী ইউনিয়ন (KITU)। গত ১৩ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত এক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন এই প্রতিবাদ জানিয়েছে। সম্প্রতি কর্ণাটক সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের সমস্ত আইটি এবং আইটিইএস কোম্পানিকে স্ব প্রত্যয়ন (Self Certification) দাখিলের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন এই প্রতিবাদ জানিয়েছে।
কিটু-র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, "স্ব-প্রত্যয়ন শ্রম আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ দায়িত্ব থেকে সরে আসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কর্পোরেশনগুলিকে স্ব-সম্মতি ঘোষণা করার অনুমতি দিয়ে, সরকার এবং শ্রম বিভাগ শ্রম শাসন, প্রয়োগ এবং পরিদর্শনের রক্ষক হিসাবে তাদের ভূমিকা থেকে সরে আসতে চাইছে। এটি কার্যকরভাবে কর্পোরেটগুলিকে কোনও তদন্তের ভয় ছাড়াই শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য স্বাধীন হবার সুযোগ দেবে।"
এই প্রসঙ্গে কিটু সাধারণ সম্পাদক সুহাস আদিগা জানিয়েছেন, স্ব প্রত্যয়ন শ্রম আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ দায়িত্ব থেকে সরে আসা ছাড়া আর কিছু নয়। কর্পোরেশনগুলিকে স্ব সম্মতি ঘোষণা করার অনুমতি দিয়ে রাজ্য সরকার এবং শ্রম বিভাগ শ্রম শাসন, প্রয়োগ এবং পরিদর্শনের রক্ষক হিসেবে তাদের ভূমিকা থেকে সরে আসছে। তাঁর মতে, এর ফলে কর্পোরেটগুলি শ্রম আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে আরও সাহসী হয়ে উঠবে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের অভিযোগ, শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার এবং কল্যাণের বদলে কর্পোরেটদের স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
কিটু জানিয়েছে, রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্র ইতিমধ্যেই ব্যাপক শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ অভিযুক্ত। কর্মীদের অতিরিক্ত সময় কাজ করানো, কোনও কারণ না দেখিয়ে ছাঁটাই, ছুটি দিতে অস্বীকার করা, অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে এই ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ কর্মচারী শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কিটু-র বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, স্থায়ী আদেশে অব্যাহতি এবং স্ব-প্রত্যয়নের ফলে কর্মীদের কার্যত কোনও প্রয়োগযোগ্য শ্রম অধিকার থাকবে না। কোনও বাধ্যতামূলক পরিষেবা শর্তাবলী এবং কোনও সরকারী তদারকি না থাকলে, শ্রমিকদের অনিয়ন্ত্রিত শোষণের ঝুঁকি আরও বাড়বে।
আইআইডিইএ-র আহ্বায়ক সুমন দাস জানিয়েছেন, আগেকার নিয়ম অনুসারে সংস্থাগুলি শ্রম আইন মেনে চলছে কিনা তা আগে দেখভাল করার দায়িত্ব ছিল সরকারের ওপর। যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রম বিভাগ প্রাসঙ্গিক নথি খতিয়ে দেখতো এবং পর্যালোচনা করে দেখা হত সংস্থাগুলি শ্রম আইন মেনে চলছে কিনা। এছাড়াও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতো শ্রম বিভাগ।
যদিও নতুন আনা নিয়মে সংস্থার হাতেই স্ব প্রত্যয়নের বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনকারীরা স্বাভাবিকভাবেই তথ্য গোপন করতে পারে এবং এর ফলে শ্রম অধিকার আরও বেশি লঙ্ঘিত হবার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
সম্প্রতি শ্রম বিভাগ কর্তৃক নন ফিসক্যাল ইন্সেন্টিভ বিভাগের অধীনে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আইটি/আইটিইএস সংস্থাগুলি স্ব প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে পারবে। যার বিরোধিতায় পথে নেমেছে কিটু।