
সাত বার পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে বুধবার মহাকাশ পাড়ি দিচ্ছেন ভারতের শুভাংশু শুক্ল (Shubhanshu Shukla)। নাসার (NASA) তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার দুপুরে মহাকাশে পাড়ি দেবে 'ড্রাগন'। এর আগে গত রবিবার মহাকাশের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল শুভাংশুদের। কিন্তু তার দু'দিন আগে সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়।
নাসার ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ অভিযানে পাইলটের দায়িত্বে রয়েছেন লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু। তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার ক্যাপ্টেন। রাকেশ শর্মার পর শুভাংশুই দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন। এই অভিযানে কমান্ডার হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাসার প্রাক্তন নভশ্চর তথা অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মানব মহাকাশযানের ডিরেক্টর রেগি হুইটসন।
এই প্রথম বার উড়তে চলেছে ধনকুবের এলন মাস্কের সংস্থা স্পেস-এক্সের ‘ড্রাগন’।মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে তাই এই অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৪ দিন ধরে এই অভিযান চলবে। বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন শুভাংশুরা। নাসা এবং ইসরোর যৌথ উদ্যোগে চার সদস্যের এই দলটি কাজ করবে। ইসরোই এই অভিযানের পাইলট হিসেবে শুভাংশুকে বেছে নিয়েছে। এ জন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার ১২টা ১ মিনিট নাগাদ 'ড্রাগন' পাড়ি দেবে মহাকাশে। আমেরিকার ফ্লরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারের ৩৯এ লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটের সাহায্যে ‘ড্রাগন’কে মহাকাশে পাঠানো হবে। সব ঠিক থাকলে এদিন ৪টে নাগাদ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (International Space Station) বা আইএসএস-এ পৌঁছোবেন শুভাংশুরা।
২০২৩ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভারত-মার্কিন যৌথ বিবৃতিতে এই ইন্দো-মার্কিন অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশন নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এর আগে সাত বার পিছিয়েছে অভিযান। এদিন তারও ব্যাখ্যা দেয় নাসা। জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের এভেজদা সার্ভিস মডিউলে মেরামতি হয়েছে সদ্য। আর এরপর সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা, তা দেখতে কিছুটা সময় দরকার। প্রথমে ছলতি বছরের ২৯ মে শুভাংশুদের অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে করা হয় ৮জুন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া এবং 'ড্রাগন'-এর ইলেক্ট্রিক্যাল হারনেসের সমস্যার কারণে অভিযান বাতিল হয়ে যায়।
এরপর ৯ জুন অভিযানের দিন ঠিক করা হয়। কিন্তু সেদিনও ফ্যালকন-৯ রকেটের প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় পিছিয়ে যায় অভিযান। এরপর খারাপ আবহাওয়া এবং প্রযুক্তিগত গোলযোগের কারণে ১০ জুনও অভিযান হয়নি। মহাকাশযানের 'ফায়ার বুস্টার' পরিদর্শনের সময় দেখা যায়, ‘এলওএক্স’ (তরল অক্সিজেন) লিক করছে। সে কারণে পিছিয়ে যায় মহাকাশযাত্রা। এভাবে নানাকারণে মোট সাতবার অভিযান পেছানো হয়। অবশেষে বুধবার ঠিক হয় অভিযানের দিনক্ষণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন