
১৩০ তফশিলি পরিবারকে মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়াতে। অভিযোগ, এসডিও-কে আগে থেকে জানালেও তাদের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
বুধবার শিবরাত্রির দিন এই ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়া মহাকুমার গীথগ্রাম পঞ্চায়েতের গীথগ্রামে। সেই গ্রামের ১৩০টি দাস পরিবারকে 'অস্পৃশ্য' বলে শিবমন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই পরিবারগুলির অভিযোগ, এসডিও-কে তারা আগে থেকে জানিয়েছিলেন, যাতে তারা সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে মন্দিরে পুজো দিতে যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসন কিছু করেনি।
প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে চিঠি লিখেছিলেন গীথগ্রামের সুকান্ত দাস, দীনবন্ধু দাসরা। ২৪ তারিখে লেখা ওই চিঠিতে তাঁরা লিখেছিলেন, “আমাদের গ্রামের মাঝখানে একটি শিবমন্দির আছে। সেখানে সমস্ত হিন্দুধর্মের মানুষ পুজো দিতে পারলেও একমাত্র দাসপাড়ার ১৩০ ঘর মানুষের মন্দিরে ওঠার অধিকার নেই। মন্দিরে উঠে পুজো দিতে গেলে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরা নিচু মুচি – অস্পৃশ্য জাত। আমাদের মন্দিরে ওঠার কোনও অধিকার নেই। আমারা মন্দিরে পুজো দিলে নাকি মহাদেব অপবিত্র হবেন। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই অপমান, লাঞ্ছনা ও বৈষম্যের অত্যাচারের শিকার হয়ে আসছি।"
চিঠিতে আবেদন জানানো হয়, ২৬ ফেব্রুয়ারি, শিবরাত্রির দিন দাস পাড়ার সকলে মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। তাঁরা যাতে সুস্ঠভাবে পুজো দিতে পারেন প্রশাসন যেন তার ব্যবস্থা করে।
অভিযোগ, তারপরেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিবরাত্রিতে ১৩০ পরিবারকে মন্দিরে উঠতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসন নীরব দর্শকের কাজ করেছে। চিঠি পেয়েও কেন প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পেছনে আরএসএসের হাত আছে কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
রাতে পুলিশ ঘিরে রেখেছিল মন্দির চত্বর। উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, প্রশাসন দু’পক্ষের কাছেই আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন