
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হাতে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। মুর্শিদাবাদের আন্দিতে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। এদিন সকালেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের দেখে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এমনকি বাড়ির পিছনের ঝোপে ফোনটাও ফেলে দেন। ব্যাঙ্কশাল আদালতে আনা হচ্ছে তাঁকে। ইডি সূত্রে খবর, বিধায়ক ও তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। উঠেছে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু করেছে ইডি। এদিন কলকাতা-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চলছে। তল্লাশি চলছে পুরুলিয়ায় প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতেও। এদিন আন্দিতে জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি ছাড়াও রঘুনাথগঞ্জে তাঁর শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় ইডি। এছাড়া বীরভূমের সাঁইথিয়ায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থা হানা দিয়েছে। তিনি সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণের পিসি হন।
সোমবার সকালে ইডির পাঁচ আধিকারিকের একটি দল আন্দিতে জীবনকৃষ্ণের গ্রামের বাড়িতে হানা দেন। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় জওয়ানদের একটি দল। জানা যায়, সেই সময় বিধায়ক নিজের বাড়িতেই ছিলেন। সূত্রের খবর, ইডি আধিকারিকদের দেখে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সেই সময় বাড়ির পিছনের ঝোপে একটি মোবাইল ফেলে দেন তিনি। কেন্দ্রীয় জওয়ান তাঁকে ধাওয়া করে ধরে পিছনের দরজা দিয়েই বাড়িতে নিয়ে আসেন। আপাতত পাঁচ আধিকারিক তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
অবশ্য এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় জীবনকৃষ্ণের আন্দির বাড়িতে টানা তল্লাশি চালায় সিবিআই। একই সঙ্গে জীবনকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। অভিযোগ ওঠে, জিজ্ঞাসাদাবাদ চলাকালীন বাড়ির পুকুরে নিজের দু’টি মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলেন তিনি। টানা জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষে অবশেষে ১৭ এপ্রিল মাঝরাতে তাঁকে হেফাজতে নেয় সিবিআই।
বড়ঞার বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়কে সহয়তা করতেন। প্রসন্ন রায়ও জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে সেই কথা উল্লেখ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণের আইনজীবী।
২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জীবনকৃষ্ণ সাহা। সেখানে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন তৃণমূল বিধায়ক। একাধিক বার জামিনের আবেদনের শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০২৪-এর ১৪ মে তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন