
* রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর এক্স হ্যান্ডেল পোষ্ট ঘিরে চাঞ্চল্য।
* যে পোষ্টে তিনি দাবি করেছিলেন কাশ্মীরের দুই ব্যক্তি বারুইপুরে বসবাস করছেন এবং তাদের বাড়ির ছাদে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ডিভাইস ইনস্টল করা হয়েছে।
* পুলিশ তদন্ত করে জানায় ওই দুই ব্যক্তি মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা।
* ফ্যাক্ট চেক সংস্থা অল্ট নিউজ সমস্ত তথ্য যাচাই করে জানিয়েছে ওটি এক বেসরকারি মোবাইল সংস্থার সাধারণ হাই-স্পিড ওয়াই-ফাই রাউটার।
কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এরই মাঝে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট করে নতুন বিতর্কের জন্ম দেন। তাঁর পোষ্টকে ভুয়ো পোস্ট বলে দাবি করেছে অল্ট নিউজ।
২৪ এপ্রিল সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার)-এ শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, কাশ্মীরের দুই ব্যক্তি বারুইপুরে বসবাস করছেন এবং তাদের বাড়ির ছাদে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ডিভাইস ইনস্টল করা হয়েছে। তিনি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA) ও রাজ্য পুলিশকে ট্যাগ করে তদন্তের আহ্বান জানান এবং সেই ব্যক্তিদের পুরো ঠিকানাসহ একটি ছবি প্রকাশ করেন।
অল্ট নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা গেছে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শেয়ার করা ছবিটি আসলে Reliance Jio AirFiber Plus (Outdoor Unit)-র। এটি একটি সাধারণ হাই-স্পিড ওয়াই-ফাই রাউটার, যা বাজারে সহজেই পাওয়া যায়। এমনকি, ইউটিউবেও এই ডিভাইসটির আনবক্সিং ভিডিও এবং রিভিউ পাওয়া গেছে, যেখানে সেটিকে সম্প্রতি প্রকাশিত Jio AirFiber-এর অংশ হিসেবেই তুলে ধরা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুভেন্দু অধিকারী যাঁদের ‘কাশ্মীরি’ বলে দাবি করেছিলেন, তাঁরা আসলে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। দু’জনই পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, একজন হিন্দু এবং অন্যজন মুসলিম। বারুইপুরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। তাঁদের মাছ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটে একটি সাধারণ Jio Wi-Fi সংযোগ ছিল, যা প্রচুর মানুষ ব্যবহার করেন।
পুলিশের তরফ থেকে আরও জানানো হয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কিছু মানুষ রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে জানানোর পরিবর্তে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ধরনের ভুল এবং সম্ভাব্য উস্কানিমূলক তথ্য প্রচার করতে পছন্দ করে। আমরা আশা করি নাগরিকরা আরও দায়িত্বের সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবেন।
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির এই ধরনের বিভ্রান্তিকর এবং সম্ভাব্য উস্কানিমূলক তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপে শুধুমাত্র নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে না, বরং সাম্প্রদায়িক বিভাজনকেও উস্কে দেয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন