
বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই ভিত পুজো হল দেউচা-পাঁচামিতে। সেখানকার জেলাশাসক বিধান রায় একথা জানান। তবে এদিন সকাল থেকেই সরকারি চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, শিল্প হোক, তাহলে কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু জমিদাতাদের সরকারি চাকরী চাই। যদিও জেলাশাসকের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মথুরাপাহাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
বুধবার বিজিবিএস –এর মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার শিল্পোন্নয়নে ইতিবাচক অনুঘটকের ভূমিকা নেবে এই কোল ব্লক। এখানে কয়লা ও ব্যাসল্টের বিপুল ভান্ডার আছে। যে কোনও দিন এই কাজ শুরু করা যায়। পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি। বৃহস্পতিবার থেকেই এখানে কাজ শুরু হবে”।
প্রাথমিক পর্যায়ে এর জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদবাজার ব্লকের চাঁদা মৌজায় যে সরকারি ‘ভেস্টেড ল্যান্ড’ আছে সেখান থেকে কাজ শুরু হবে। এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন জেলাশাসক বিধান রায়। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করা হচ্ছে। সরকারি ভেস্টেড জমিতে খনন শুরু হবে। কাউকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না”। এমনকি নতুন গাছ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান জেলাশাসক।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে কাজ শুরু হতেই জমিদাতাদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে। তাঁদের বক্তব্য, এলাকায় শিল্প হচ্ছে হোক, তাতে কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু আগে জমিদাতাদের সরকারি চাকরী দেওয়া হোক। এক এলাকাবাসীর কথায়, “কাজ চালু হয়েছে। গরিবরা কাজ পাবে। তবে সরকার জানিয়েছিল জমিদাতাদের সরকারি চাকরী দেওয়া হবে। চাকরিটা আগে দেওয়া হলে ভরসা জন্মায়”। এক জমিদাতার কথায়, “এক বছর হয়েছে জমি নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি চাকরী হয়নি। শিল্প চাই, শিল্পের বিরোধিতাও করছি না। কিন্তু চাকরী কই?”
যদিও বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, ‘‘অনেক মা-বোনেরা এসেছেন। তারা খুশি। আবেদনপত্র যাঁরা আগে দিয়েছেন, আগে পাচ্ছেন। যাঁরা পরে দিয়েছেন, পরে পাচ্ছেন। খনি হলে স্থানীয় বাসিন্দারাই কাজ পাবেন। প্রত্যেক ঘর থেকেই কাজ পাবেন”।
অন্যদিকে, বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘সকালের দিকে কিছু সমস্যা ছিল। তার সমাধান হয়ে গিয়েছে। মা বোনেরা খুশি। কাজ শুরু হয়ে যাবে। যত কাজ হবে, স্থানীয়েরাই কাজ পাবেন। সুবিধা পাবেন স্থানীয়েরাই। ছোট কোনও সমস্যা হলে পুলিশ-প্রশাসন মিলে সমাধান করব। আশা করি দ্রুত প্রকল্প এগোবে”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন