উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ ওঠা 'অযোগ্য'রা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট
যাঁদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা এসএসসির নতুন নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা 'অযোগ্য' শিক্ষকদের আর্জি খারিজ করে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না। এমনকি বেতনও পাবেন না ওই শিক্ষকরা।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিল করেন। যার জেরে চাকরি হারান ২৫,৭৫৩ জন। পাশাপাশি, শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেন, কমিশনকে আবার নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তবে যাঁরা দাগি বা অযোগ্য, তাঁরা কমিশনের নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন না। পাশাপাশি, তাঁদের বেতন ফেরত দিতে হবে।
নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই ‘দাগি’দের তালিকায় তাঁরা পড়েন না। কারণ তাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে বা প্যানেল বহির্ভূত ভাবে চাকরি পাননি। তাঁদের উত্তরপত্রে কিছু কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। সেকারণে তাঁরা আবার নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বসতে চান। পাশাপাশি, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বেতনও চান তাঁরা। এই আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, ৩ এপ্রিলের রায়ে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। মামলাকারীদের উদ্দেশ্যে আদালতের প্রশ্ন, ‘‘রায় ঘোষণার পরে এখন যোগ্য বা অযোগ্যের কথা কী ভাবে বলছেন?’’
এদিন সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারীদের হয়ে আবেদন করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি, করুণা নন্দীরা। আদালতে তাঁদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট দাগি হিসেবে যাঁদের চিহ্নিত করেছে তাঁদের মধ্যে মূলত তিন ধরনের চাকরিপ্রাপক রয়েছেন। এক, যাঁরা প্যানেল বহির্ভূত, দুই, যাঁরা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন এবং তিন, যাঁরা সাদা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এই তিন ধরনের তালিকায় তাঁদের মক্কেলদের নাম নেই। তাই নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় তাঁদের সুযোগ পাওয়া উচিত।
অন্যদিকে, মূল মামলাকারীর আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, ফিরদৌস শামিমরা। তাঁরা জানান, যাঁরা উত্তরপত্রে কারচুপির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও ‘দাগি অযোগ্য’দের মধ্যেই পড়েন।
উল্লেখ্য, যাঁরা র্যাঙ্ক জাম্প করে বা মেধাতালিকার ক্রম অনুযায়ী পিছিয়ে থাকার পরেও অন্যদের টপকে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের আবেদন আগের দিন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি খান্নার রায়ে কোনও ভুল নেই। র্যাঙ্ক জাম্প করলে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বসা যাবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন