

রাজ্যে এসআইআর-এর শুনানি পর্বে বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের হয়রানির খবর সামনে আসছে। পাশাপাশি এদিনই মগরাহাটে নির্বাচন কমিশনের অবজারভার সি মুরুগানের গাড়িতে হামলা হয়েছে। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া শুনানি পর্ব ঘিরে বারবার একাধিক অভিযোগ উঠছে। এসআইআর-এর শুনানিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় অব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
এদিন মগরাহাটে এবং চুঁচুড়ায় শুনানির সময় তৃণমূলের বিএলএ-দের থাকতে দেবার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়। মগরাহাটে নির্বাচন কমিশনের অবজারভারের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। অন্যদিকে চুঁচুড়ায় সরাসরি শুনানির জায়গায় ঢুকে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। এদিনই মেদিনীপুরে শুনানি পর্বে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় জেলাশাসকের কার্যালয়ের শুনানি কেন্দ্রে। বন্ধ করতে হয় শুনানি প্রক্রিয়া।
তৃণমূলের বিধায়ক অসিত মজুমদারের দাবি, শুনানিতে বিএলএ-দের থাকতে দিতে হবে। তাঁর বিক্ষোভের জেরে প্রায় দুঘণ্টা বন্ধ থাকে শুনানির কাজ। যাতে দূর দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষের হয়রানি আরও বাড়ে। যদিও সোমবারের এই ঘটনার পর কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুনানি পর্বে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবেনা।
বিভিন্ন জায়গায় এসআইআর-এর শুনানিতে এসে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ভোটাররা। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিবন্ধী মানুষ, বয়স্ক মানুষকে অযথা শুনানিতে ডেকে এনে হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁদের বহুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হচ্ছে। বিনা কারণে তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
অন্যদিকে গতকালই বাঁকুড়ার রানীবাঁধে হারাধন মণ্ডল নামের এক প্রাথমিক শিক্ষক বিএলও আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার দুপুরে স্কুলের তালা খুলে ভেতরে ঢুকে ওই শিক্ষক আত্মঘাতী হন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ এসআইআর-এর কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (SIR) প্রক্রিয়ার শুনানি পর্ব শুরু হয়েছে শনিবার ২৭ ডিসেম্বর। রাজ্যজুড়ে মোট ৩ হাজার ২৩৪ টি শুনানি কেন্দ্রে প্রথম পর্বে প্রায় ৩২ লক্ষ আনম্যাপড ভোটারকে শুনানিতে ডাকা হয়েছে। যারা ২০০২-এর ভোটার তালিকার সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক দেখাতে পারেননি, তাদের আধার কার্ড সহ মোট ১২টি স্বীকৃত নথি পেশ করার সুযোগ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র আধার কার্ডকে নথি হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। বিহারের গত বছরের এস আই আর এর তালিকাকেও বৈধ নথি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নকল বা ভুয়ো নথি জমা দিলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
শুনানি শুরুর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল জানান, শুনানির যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন। সাড়ে চার হাজারের বেশি মাইক্রো অবজারভারের কড়া নজরদারিতে শুনানি পর্ব চলবে। ইআরও (ERO), এইআরও (AERO), বিএলও (BLO) পর্যবেক্ষকের মত অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া শুনানি কেন্দ্রে অন্য কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। শুনানির সময় প্রতিটি কেন্দ্রেই ফটো ডকুমেন্টেশন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন