ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR)-এ উত্তরপ্রদেশ থেকে বাদ যেতে চলেছে প্রায় ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ভোটারের নাম (প্রায় ২ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭৫ হাজার)। যা উত্তরপ্রদেশের মোট ভোটারের প্রায় ১৮.৭০ শতাংশ। গত শুক্রবারই এখানে এসআইআর-এর প্রাথমিক পর্যায় শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এসআইআর প্রক্রিয়ার পর আগামী ৩১ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকতে চলেছে ১২ কোটি ৫৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ভোটারের। যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি ভোটারের নাম ‘আনম্যাপড’ হিসেবে আছে।
কমিশনের আধিকারিকদের সূত্র অনুসারে, সবথেকে বেশি নাম বাদ যেতে চলেছে লখনৌ থেকে, যা প্রায় ১২ লক্ষ। এরপরেই আছে প্রয়াগরাজ। যেখানে বাদ যেতে চলেছে ১১ লক্ষ এবং কানপুর থেকে বাদ যেতে চলেছে ৯ লক্ষ নাম। এছাড়াও আগ্রা, গাজিয়াবাদ থেকেও প্রায় ৮ লক্ষ করে নাম বাদ যেতে চলেছে।
নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত খসড়া তালিকায় যাদের নাম বাদ যাবে তাঁরা ২০২৬-এর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের আপত্তি দাখিল করতে পারেন। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁদের নাম ফের চূড়ান্ত তালিকায় যুক্ত হতে পারে। যে তালিকা প্রকাশিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।
উত্তরপ্রদেশের ভোটার তালিকায় নাম ছিল মোট ১৫ কোটি ৪৪ লক্ষ ভোটারের। ৩১ ডিসেম্বর যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে তাতে ১২ কোটি ৫৫ লক্ষ ভোটারের নাম থাকতে চলেছে। নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যেসব ভোটারের খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁদের নাম তুলতে হলে ২০০৩ এসআইআর-এ তাঁদের নাম অথবা নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন করতে হবে। তিনি আরও জানান, যাদের নাম খসড়া তালিকায় আছে সেই নাম নিয়ে কোনও আপত্তি থাকলে ফর্ম ৭-এর তা বাদ দেবার আবেদন করতে হবে। যদি সেই আবেদন যুক্তিপূর্ণ হয় তাহলে সেই নামও তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
নাম বাদ যাবার কারণ হিসেবে কমিশন জানিয়েছে মৃত ভোটার, স্থানান্তরিত ভোটার, খুঁজে পাওয়া যায়নি এমন ভোটার এবং একাধিক জায়গায় নাম থাকা ভোটারদের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এই চার ক্ষেত্রের মধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে সবথেকে বেশি নাম বাদ গেছে স্থানান্তরের কারণে।
কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে খসড়া তালিকায় ৯.৮১ শতাংশ নাম আছে ‘আনম্যাপড’ ক্ষেত্রে। যাদের নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। এঁরা নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া তথ্যাদির ভিত্তিতে প্রমাণ দিতে পারলে তাঁদের নামও ‘ম্যাপড’ হিসেবে যুক্ত করা হবে। এঁদের সকলকেই নোটিশ পাঠানো হবে। কমিশনের সূত্র অনুসারে প্রায় ৮ লক্ষ এসআইআর ফর্ম বিলি করা হলেও তা বিএলও-দের কাছে ফিরে আসেনি।
উত্তরপ্রদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে এই সবকিছুই করা হচ্ছে ভোটে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি জানিয়েছে, বিরোধী দলের আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তারা আসলে অনুপ্রবেশকারীদের ঢাল হয়ে দাঁড়াতে চাইছেন।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন