আরও এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক বাংলার কয়েকশো শ্রমিক, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
মহারাষ্ট্রের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকশ শ্রমিককে আটক করে রাখার অভিযোগ উঠল। যা নিয়ে মঙ্গলবার বিধানসভায় ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বারবার বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের সঙ্গে এহেন ঘটনা কেন ঘটছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন, ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের সাহায্য করার জন্য।
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের মান্নাই অঞ্চলের খিসাহার গ্রাম-সহ পাশ্ববর্তী গ্রাম থেকে ৩০০-র বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ ওঠে, বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের সকলকে সেখানে আটক করে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন আটকে পড়া শ্রমিকেরা। বিষয়টি রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে জানিয়েছেন বিধায়ক। যা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অন্যান্য রাজ্যের দেড় কোটি শ্রমিক এ রাজ্যে কাজ করেন। তাঁদেরকে তো আমরা অসম্মান করি না! কিন্তু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এঁরা কি ভাষায় কথা বলতেন না? এরা সে সব ভুলে গিয়েছে"।
মমতা জানান, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বাঙালিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব কী, তা জানি না। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বাঙালিদের নিয়ে সমস্যা রয়েছে"। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য সে রাজ্যের সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন মনোজ পন্থ। শীঘ্রই তাদের ফেরানোর হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে তিন বাঙালিকে বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে মুম্বই পুলিশ। এমনকি নথি যাচাই না করেই তাঁদের বাংলাদেশেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের নজরে এলে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগে ফ্ল্যাগ মিটিং করে ওই তিন জনকে আবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। এই ঘটনা নিয়ে গত সপ্তাহেই সরব হয়েছিলেন মমতা। ফের একবার বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন