
দক্ষিণ ২৪ পরগণার জয়নগরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল বারুইপুর আদালত। মাত্র ৬৩ দিনের মধ্যেই শুক্রবার এই মামলার রায় দান সম্পন্ন করল আদালত। বৃহস্পতিবার মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন নিম্ন আদালতের বিচারপতি। ফাঁসির সাজা ঘোষণার পাশাপাশি মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন বারুইপুর ফাস্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজেস কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়।
রায়দানের পর সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নৃশংস ঘটনা। বিরল ঘটনা। তাই ফাঁসির আবেদন করেছিলাম আমরা। বিচারক দোষীকে ফাঁসির সাজাই দিয়েছেন। এই মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ডিএনএ প্রোফাইল মিলে গিয়েছে। ফলে সন্দেহের আর কোনও অবকাশই থাকে না’।
অন্যদিকে, এই মামলার সাজা ঘোষণার পরেই এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্য পুলিশের তরফে পোষ্ট করা হয়। যেখানে লেখা হয়, ‘জাস্টিস ফর জয়নগর!’ পোষ্টে আরও লেখা হয়েছে, ‘এই রায় নজিরবিহীন। নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় ঘটনার মাত্র ৬৩ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের ফাঁসির আদেশ এর আগে পশ্চিমবঙ্গে কখনও ঘটেনি। এই মামলার তদন্তে আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, যত দ্রুত সম্ভব নির্যাতিতা এবং তার পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়া। মেয়েটি আর ফিরবে না। কিন্ত যে অভূতপূর্ব দ্রুততায় তাকে এবং তার পরিবারকে আমরা ‘জাস্টিস’ দিতে পেরেছি, দীর্ঘ দিন বিচারহীন থাকতে হয়নি, এটুকুই আমাদের সান্ত্বনা, আমাদের প্রাপ্তি।’
আর জি কর ঘটনার আবহে প্রকাশ্যে আসে জয়নগরের ঘটনা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় চারিদিকে। গত ৪ অক্টোবর গৃহশিক্ষকের বাড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। সময় পেরিয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার পরিবার। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। এরপর গভীর রাতে বাড়ির কাছের জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার দেহ। ওই রাতেই গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত মোস্তাকিন।
প্রাথমিক ভাবে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পকসো ধারা যুক্ত করা হয়। এর পরেই তদন্তে সিট গঠন হয়। ঘটনার ২৬ দিন পর গত ৩০ অক্টোবর চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী দল। ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। জানা যায়, মোট ৩৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এই মামলায়। শুক্রবার অভিযুক্ত মোস্তাকিনকে ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন