
ফের সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কার করতে গিয়ে মৃত্যু হল দুই প্রৌঢ়ের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এক মহিলা-সহ দুজন। ঘটনাটি ঘটেছে নন্দীগ্রামে। মৃত দুই শ্রমিকের নাম মৃত্যুঞ্জয় জানা (৬০), মানস গিরি (৫২)। মৃত্যুঞ্জয় গিরির বাড়ি মনুচকে। মানস গিরি বাড়ির মালিকের আত্মীয় বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের-১ নম্বর ব্লকের ভেকুটিয়ায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই গ্রামের বাসিন্দা কানাই জানা বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কারের জন্য দু’জন শ্রমিককে ডাকা হয়। নামানো হয় ট্যাঙ্কে। পরে কানাই জানা এবং তাঁর ছেলের স্ত্রী মৌমিতা জানাও এই কাজে হাত লাগায়। ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন চারজনই। নন্দীগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যুঞ্জয় জানা এবং মানস গিরিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, “মৃত্যুঞ্জয়, মানস, কানাই এবং মৌমিতা – চারজনই সকালে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কার করছিল। মৃত্যুঞ্জয় ও মানস ছিল নীচে এবং কানাই ও মৌমিতা ছিল একটু উপরে। হঠাৎই চিৎকার শুনে সেপটিক ট্যাঙ্কের কাছে গিয়ে দেখি মৃত্যুঞ্জয় ও মানস দু’জনেই ডুবে আছেন। কানাইয়ের মাথা এবং মৌমিতার মুখ দেখা যাচ্ছিল। এক এক করে উদ্ধার করা হয় সকলকে”।
মৌমিতা ও কানাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি আছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “সুরক্ষা ছাড়াই সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে”।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলকাতাতেও একইরকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা লাগোয়া বাণতলায় ম্যানহোল পরিস্কার করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তিন শ্রমিকের। এঁদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদ এবং অন্য এক জনের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণায়। মৃত শ্রমিকদের নাম ফরজেম শেখ (৬০), হাশিবুর রহমান (২৬) এবং সুমন সর্দার (৩২)।তিন শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা করে দেবার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে ঠিকাদারের শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জানুয়ারি শীর্ষ আদালত কলকাতা সহ দেশের ছ’টি মেট্রো শহরে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং বা মানুষ নামিয়ে ম্যানহোল পরিষ্কার পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ ফেব্রুয়ারি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন