Manual Scavenging: আইনত নিষিদ্ধ - তবুও গত ৫ বছরে ম্যানহোল সাফ করতে নেমে দেশে মৃত ৩৩৯ জন!

চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মৃত্ ৯। ২০২২ সালে মৃত্যু হয়েছিল ৬৬ জনের। ২০২১ সালে মৃত্যু হয় ৫৮ জনের এবং ২০২০ সালে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১১৭ জনের এবং ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় ৬৭ জনের।
ছবি - প্রতীকী
ছবি - প্রতীকী ছবি সৌজন্যে - সবরঙ ইন্ডিয়া

গত পাঁচ বছরে দেশে নর্দমা সাফাই করতে নেমে কমপক্ষে ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে একথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

লোকসভায় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক (Ministry of Social Justice and Empowerment) জানিয়েছে, এঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৯। ২০২২ সালে মৃত্যু হয়েছিল ৬৬ জনের। ২০২১ সালে মৃত্যু হয় ৫৮ জনের এবং ২০২০ সালে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১১৭ জনের এবং ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় ৬৭ জনের।

লোকসভায় মন্ত্রকের দেওয়া উত্তর অনুসারে, “নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্কগুলির বিপজ্জনক পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জার হিসাবে নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের পুনর্বাসন আইন, ২০১৩-এর অধীনে নির্ধারিত সুরক্ষা সতর্কতাগুলি পালন না করার কারণে” এই মৃত্যুগুলি ঘটেছে৷

আইন অনুসারে ভারতে মানুষকে ব্যবহার করে সেপটিক ট্যাঙ্ক বা ভূগর্ভস্থ নর্দমা পরিষ্কার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং বিষয়ক আইন অনুসারে এটি একটি বেআইনি প্রথা।

সেলফ এমপ্লয়মেন্ট স্কিম অফ লিবারেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অফ স্ক্যাভেঞ্জারস ২০২৩-২৪ বাজেট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না এই প্রশ্নের জবাবে, সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়নের জুনিয়র মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে লোকসভাকে জানান, প্রকল্পটির নামকরণ করা হয়েছে ন্যাশনাল অ্যাকশন ফর মেকানাইজড স্যানিটেশন ইকোসিস্টেম (NAMASTE)।

ঘটনাচক্রে, এই স্যানিটেশন কর্মীরা নিরাপত্তা সরঞ্জাম এবং উপযুক্ত যন্ত্রপাতির অভাবে নেমে মাঝে মাঝেই প্রাণ হারায়, যদিও কেন্দ্রীয় সরকার এই সময় নতুন ভবন নির্মাণ এবং এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে।

গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে দেশে ম্যানুয়াল স্ক্যাভাঞ্জিং নিয়ে সংসদে একটি তথ্য তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিমন্ত্রী রামদাস আঠাওয়াল। যেখানে তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে দেশে ম্যানহোল পরিস্কার করতে গিয়ে মারা গেছেন ৩৫২ জন।

এর মধ্যে সবথেকে বেশি মানুষ মারা গেছেন বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে। সেখানে মৃতের সংখ্যা ৫৭। তারপরে রয়েছে দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ু। ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই রাজ্যে ম্যানহোল পরিস্কার করতে গিয়ে মারা গেছেন ৪৬ জন।

পরিসংখ্যানের বিচারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশের রাজধানীর দিল্লি। যেখানে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন।

আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ ভালোভাবে না হওয়ায়, গত পাঁচ বছর আগেই সকলকে সতর্ক করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এক রায়ে '২০১৩ সালের ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং আইন' কার্যকর করার উপর জোর দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে, আদালত জানিয়েছিল, 'সারা দেশে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং নিরীক্ষণ এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের সাথে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জারদের পুনর্বাসন কার্যকর করতে হবে। 

জানা যাচ্ছে, সারা দেশে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জার বা সাফাই কর্মীদের সংখ্যা জানতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে 'স্বচ্ছতা অভিযান' নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছিল কেন্দ্র। এর আগে, ২০১৮ সালেও একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় সামাজিক সুরক্ষা মন্ত্রক।

গত বছরের এপ্রিল মাসের শেষে উঠে আসা তথ্য তুলে ধরে রামদাস আঠাওয়াল জানান, সারাদেশে সাফাই কর্মীদের সংখ্যার বিচারে শীর্ষে রয়েছে যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। সেখানে সাফাই কর্মীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৪৭২ জন। এরপরে রয়েছে মহারাষ্ট্র, যেখানে সাফাই কর্মীর সংখ্যা ৬ হাজার ৩২৫ জন। পরবর্তী স্থানে রয়েছে উত্তরাখণ্ড (৪ হাজার ৯৮৮ জন), আসাম (২ হাজার ৯২৭জন) এবং কর্ণাটক (২ হাজার ৬৭৩ জন)।

ছবি - প্রতীকী
Maharashtra: সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারালেন ৫ শ্রমিক
ছবি - প্রতীকী
'আবার 'মিথ্যাচার' মোদী সরকারের', সাফাই কর্মীদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে সরব ইয়েচুরি

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in