
এবার ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং অর্থাৎ ম্যানহোলে মানুষ নামিয়ে নর্দমা পরিষ্কার নিয়ে কড়া বার্তা দিল দেশের শীর্ষ আদালত। নর্দমা বা ম্যানহোল পরিস্কারের জন্য নামানো যাবে না কোনও কর্মীকে। দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু এবং হায়দ্রাবাদ – এই ছ’টি মেট্রো শহরে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই ছ’টি শহরের প্রধান নির্বাহী কর্তাদের আদালতে এই নিয়ে হলফনামা দিতে হবে। সেই হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে, কখন এবং কীভাবে সংশ্লিষ্ট শহরগুলোতে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশ জুড়ে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং বন্ধ করার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার। সম্প্রতি সেই নিয়ে কেন্দ্র রিপোর্টে জানিয়েছে, ভারতের ৭৭৫ টি জেলার মধ্যে ৪৫৬ টি জেলায় ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং নিয়ে কোনও ঘটনার রিপোর্ট করা হয় নি। অর্থাৎ এই জেলাগুলিতে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং পুরোপুরি নির্মূল।
তবে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আদালতের পর্যবেক্ষণ, মেট্রো শহরগুলিতে ম্যানুয়াল স্ক্যাভিঞ্জং পুরোপুরি নির্মুল হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘আমরা মনে করি এবার এই নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়ার সময় এসেছে’।
২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছিল, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই ভারতের প্রতিটি অংশে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে আইনত বাধ্য। তবুও এখনও কিছু জায়গায় এই প্রথা চালু রয়েছে।
তবে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নতুন নির্দেশের পর সংশ্লিষ্ট শহরগুলিতে এই নিয়ে প্রশাসন আরও কঠোর হতে বাধ্য হবে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে প্রান্তিক মানুষগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
১৯৯৩ সালে দেশে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়ছিল ম্যানুয়াল স্ক্যাভাঞ্জিং। তারপরেও সারাদেশে চলছে এই নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড। এর জেরে প্রতিবছর বহু মানুষের মৃত্যুও হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন