
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে সামনে পেয়েই স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুর্শিদাবাদের হিংসায় আক্রান্তরা। সামশেরগঞ্জের বেতবোনা গ্রামে রাজ্যপালের কনভয়ের পথ আটকে অবরোধ করলেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
শুক্রবারের পর শনিবারও ওয়াকফ আইন নিয়ে ঘটা হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন রাজ্যপাল। আজ জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে যান রাজ্যপাল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাজ্যপাল জানান, "আমি ওঁদের বলেছি বিচার ওঁরা পাবে। বিএসএফ ক্যাম্পের বিষয়টি রাজ্যকে আমি জানাব। কেন্দ্রকেও এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। রাজ্য প্রশাসনেরও উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া"।
অন্যদিকে, সামসেরগঞ্জের বেতবোনা অঞ্চলের মানুষ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যপাল আমাদের সাথে দেখা না করেই চলে গেলেন। রাজ্য পুলিশ রাজ্যপালকে ইচ্ছা করে নিয়ে চলে গেছে। আমাদের বাড়ি-ঘর সমস্ত কিছু পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লাগাতার আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিএসএফ চলে গেলেই আমাদের উপর হামলা হবে।
বেতবোনার বিক্ষুব্ধরা রাজ্যপালের কনভয়ে থাকা অন্যান্য গাড়িগুলির সামনে অবরোধ করে বসে পড়েন। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে অবরোধ তোলার চেষ্টা হলেও নিজেদের দাবিতে অনড় গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের দাবি ওই অঞ্চলে স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গত, গতকালও রাজ্যপালের সামনে বিক্ষোভ দেখান আক্রান্তরা। মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় শিবিরে যান রাজ্যপাল। তাঁকে দেখেই হাইস্কুলের বাইরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রামবাসী এবং ঘরছাড়াদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা দাবি জানান, সমস্ত কিছু সাংবাদমাধ্যমের সামনে দেখাতে হবে। এমনকি পুলিশি ব্যারিকেড টপকে অনেকেই রাজ্যপালের সাথে কথা বলতে ঢুকে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামানো হয় র্যাফ।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা উত্তেজনার পর মুর্শিদাবাদে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া বহু পরিবার ইতোমধ্যেই মালদহ ও ঝাড়খণ্ড থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজর্ষি মিত্র এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার বিভিন্ন অংশে পরিদর্শন চালিয়ে ঘরছাড়াদের বাড়ি ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানান। তারা যেন নিরাপদ পরিবেশে স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন