
২০২৩ সালে আর জি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন আখতার আলি। সেই সময় তাঁকে বদলি করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপর গত বছর আগস্টে আর জি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের আবহে প্রকাশ্যে আসে সেই সমস্ত দুর্নীতির অভিযোগ। শুরু হয় তদন্ত। সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা সেই আখতার আলিকেও এবার বদলি করা হল উত্তরবঙ্গে। যদিও প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এটি রুটিন বদল। এর আগে গত মাসে আর জি কর আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ ডক্টর সুবর্ণ গোস্বামীকেও দার্জিলিংয়ে বদলি করা হয়।
এর আগে আখতার আলিকে বদল করে পাঠানো হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার (নন-মেডিক্যাল) পদে। এত দিন সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। তবে এবার তাঁকে বদলি করে পাঠানো হল উত্তর দিনাজপুরে। সেখানে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের ডেপুটি সুপার (নন-মেডিক্যাল) করা হয়েছে আখতার আলিকে।
দু’বছর আগে আর জি কর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের ১৫ টি অভিযোগ তুলে রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই হাসপাতালের তৎকালীন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। অভিযোগ গুলির মধ্যে ছিল – সরকারি অর্থের অপব্যবহার, স্বাস্থ্যভবন এবং কলেজ কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া সরকারি সম্পত্তি অনৈতিকভাবে অন্যের হাতে তুলে দেওয়া, শিক্ষাখাতে তহবিলের অপব্যবহার, অর্থ নিয়ে অবৈধভাবে আধিকারিকদের বদলি করা, চিকিৎসা বর্জ্য বেআইনিভাবে বিক্রি।
এছাড়া, অনলাইনে দরপত্র এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বড় অঙ্কের বরাতকে ভেঙে ছোট করে নিজের পছন্দ মতো সংস্থাকে বরাত দেওয়া, ওষুধের বরাতে দুর্নীতি। এমনকি কোভিডের সময় তহবিলের ব্যবহার করে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনারও অভিযোগ উঠেছিল সন্দীপের বিরুদ্ধে। আখতারের দাবি ছিল, এই নিয়ে আওয়াজ তোলায় অধ্যক্ষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। যার ফলে প্রথমে তাঁকে বদলি করে পাঠানো হয় হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে। পরে তাঁকে বদলি করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। এমনকি সেই সময় সন্দীপ প্রভাব খাটিয়ে তাঁকে রিলিজ দেননি। স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। ৫২ দিন ইচ্ছাকৃত ভাবে সার্ভিস ব্রেক করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন আখতার।
এরপর ২০২৪ সালে ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু হলে, সেই সময় তদন্তের আওতায় চলে আসে পরে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আখতারের তোলা অভিযোগগুলো। বর্তমানে সিবিআই এই অভিযোগের তদন্ত করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন