

চিকিৎসায় গাফিলতির ফলে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছিল, বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ সুভাষ সরকারের ছেলে চিকিৎসক সোমরাজ সরকারের গাফিলতির জেরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়।
বাঁকুড়ার হার্দিক হাসপাতাল সুভাষ সরকারের মালিকানাধীন হাসপাতাল বলে পরিচিত। ওই হাসপাতালেই গত ২৪ মার্চ বছর ছাব্বিশের মৌসুমি দে ভর্তি হন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ওই দিনই অস্ত্রপাচার হয় মৌসুমির। এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপর হঠাৎ করেই গুরুতর অসুস্থতার কারণে অন্য হাসপাতালে বদলি করা হলে গত ২৫ মার্চ সেখানেই মারা যান মৌসুমি।
এরপরেই সুভাষের ছেলে সোমরাজের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। সোমরাজ সরকার এক জন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ এবং শল্য চিকিৎসক। সেই ঘটনায় চিকিৎসক সোমরাজের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখান এলাকার মানুষ। ভাঙচুর চালান হাসপাতালে। মৌসুমীর স্বামীর অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের পর তাঁর স্ত্রীকে দেখে সোমরাজ এবং অন্য চিকিৎসকেরা জানান, তিনি ভাল আছেন। অথচ কয়েক ঘণ্টা পরেই হঠাৎ মাত্রাছাড়া রক্তপাত হতে শুরু করে মৌসুমীর।
এই ঘটনার খবর পাওয়ার অনেক ঘন্টা পর সোমরাজ রোগীকে দেখতে আসেন বলে অভিযোগ। তার পরেও চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়। এর ফলে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় মৌসুমীর। তাঁকে হার্দিক হাসপাতাল থেকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বদলি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন ২৫ মার্চ মৃত্যু হয় তাঁর। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, শারীরিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে মৌসুমীর।
এরপরেই মৌসুমির দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় পরিবারের লোকজন। বাঁকুড়ার সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরও। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের তদন্তে চিকিৎসক সোমরাজ সরকারের গাফিলতি ধরা পড়ে বলেই খবর। নার্সিংহোমে উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও ওই রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ভোটের মুখে বিজেপি প্রার্থীর ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে খানিকটা অস্বস্তিতে দল। তবে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুভাষ সরকার বা তাঁর ছেলে সোমরাজ সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে এফআইআর করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন