
স্যালাইন বিতর্কে আরও জোরালো আন্দোলন বামেদের। রবিবার মেদিনীপুর হাসপাতালের সুপারের ঘরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় ডিওয়াইএফআই। এরপর রাতে এসএসকেএম হাসপাতালের সামনেও অবস্থানে বসেন তাঁরা। দিনভর বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, ময়ূখ বিশ্বাস-সহ অন্য নেতারা। উল্লেখ্য, মিনাক্ষী ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরে দলের সাংগাঠনিক কর্মসূচিতে। সেখান থেকে রবিবার মেদিনীপুরে পৌঁছান তিনি।
এদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় মিছিল করে সিপিআইএম-এর ছাত্র সংগঠন। পরে কুশপুতুল নিয়ে হাসপাতাল সুপারের ঘরের সামনে পৌঁছান তাঁরা। সুপারের ঘরের গেট তালা বন্ধ থাকায়, বাম কর্মীরা আরও একটি তালা বাইরে থেকে ঝুলিয়ে দেন। যদিও হাসপাতাল চত্বরে কুশপুতুল দাহ করেননি তাঁরা। সেখানে কেবল বিক্ষোভ দেখায় তাঁরা।
এনিয়ে মীনাক্ষী বলেন, ‘পুলিশ-প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের যোগসাজশে দুর্নীতির শিকড় ভিতর অবধি পুঁতে না দিলে, জাল ওষুধ পশ্চিমবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চলতে পারে না’। আরজি কর-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে মীনাক্ষীর প্রশ্ন, ‘দুর্নীতিরোধে পুলিশ নিজের কাজ কেন করতে পারছে না? তা হলে কি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে আটকাচ্ছেন? না কি এরা নিজেদের ইচ্ছামতো তদন্ত করছে?’
প্রসঙ্গত, শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরে শুরু হয়েছে সিপিআইএমের জেলা সম্মেলন। দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্বে ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। হরিরামপুরে সিপিআইএমের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্যও রাখেন তিনি। তবে স্যালাইন কাণ্ডে রবিবার সকালেই কলকাতায় পৌঁছান তিনি। এরপর সরাসরি মেদিনীপুরের বিক্ষোভে যোগ দেন মীনাক্ষী।
অন্যদিকে, স্যালাইন কাণ্ডে হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে দুটি জনস্বার্থ মামলা। একটি জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। দ্বিতীয়টির জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। দু’টি জনস্বার্থ মামলাই দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এডুলজির মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার হওয়ার সম্ভাবনা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মেদিনীপুরে সিজার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচ প্রসূতি। জাল স্যালাইন দেওয়া হয়েছে তাঁদের বলে অভিযোগ। ওই স্যালাইনের গুণমান নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছিল। পাঁচ জনের মধ্যে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অপর একজনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে জেনারেল বেডে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিনজনের অবস্থা সঙ্কটজনক। রবিবার রাতে গ্রিন করিডর করে কলকাতা এসএসকেএমে তিন প্রসূতিতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীনে তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন