
৮১ দিন কেটে গেছে। কিন্তু এখনও জমা পড়েনি তামান্না খুনের চার্জশিট। এদিন কৃষ্ণনগরের এসপি-র সঙ্গে দেখা করতে যান তামান্নার মা। অভিযোগ, তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁর সামনেই অফিসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর অফিসের সামনেই ধর্নায় বসে পড়েন তামান্নার বাবা-মা।
কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়লাভের পর শাসকদলের বিজয়োল্লাস থেকে ছোড়া বোমায় মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুনের। এই ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তামান্নার মায়ের অভিযোগ, একাধিকবার তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন, প্রমাণ দিয়েছেন, তবু পুলিশ কোনও বিশেষ পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টে অভিযুক্তদেরকেই সাক্ষী করছে পুলিশ। দু'মাসের বেশি সময় কেটে গেছে।
এদিন তমন্নার মা বলেন, "আমার মেয়ে আজ নেই। আমরা শুধু চাই, দোষীরা যেন শাস্তি পায়। কিন্তু ৮১ দিন পেরিয়েও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। এখন এসপি সাহেবের সঙ্গে দেখা করতেও দিচ্ছে না। দরজা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে আমাদের মুখের ওপর। তাহলে আমরা যাব কোথায়?"
প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে ধর্না দেন তমন্নার বাবা, মা ও তাঁদের কয়েকজন আত্মীয়। হাতে ছিল ‘বিচার চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
এর আগে পুলিশের উপর ভরসা রাখতে না পেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বলেছিলেন তামান্নার মা। দাবি তুলেছিলেন সিবিআই তদন্তের।
গতমাসে নিহত তামান্না খাতুনের মা বলেছিলেন, "কলকাতা হাইকোর্টে যাব। ওখানে সিবিআই তদন্ত চাইব। এখানে আমাদের পুলিশের ওপরে ভরসা নেই। পুলিশ আমাদেরকে এক বলছে, আর ওদের সঙ্গে আরেক কাজ করছে। ওইজন্য পুলিশের ওপর আর ভরসা নেই। আমরা সিবিআই তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে যাব"।
তিনি আরও বলেন, "আমার মেয়েকে যারা মেরেছে, যারা খুনি, ওদেরকেই পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে সাক্ষী দেওয়ার জন্য, ওটা রাজনীতি হচ্ছে না? পুলিশ কী করছে? পুলিশ আমাকে এক বলছে, ওদেরকে এক বলছে"।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে সিপিআইমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "এত দিন অপেক্ষা করল পরিবার, পুলিশ কোনও বিচার দিতে পারল না? সিবিআই-এ আমরাও আস্থা রাখি না, কিন্তু মা তো, কী করবে! কালীগঞ্জে উপ নির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। ফল প্রকাশের দিন বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ছোট্ট তমান্না"।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "সিবিআই চাইছে চাক। এর আগে তো অভয়া কেসেও প্রথমে সিবিআই চাওয়া হল। তারপর বলল সিবিআই পারছে না। এর আগে নোবেলও তো খুঁজে পায়নি সিবিআই"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন