দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে অবিলম্বে সকলকে আধার কার্ড করে দিতে হবে! প্রশাসনকে নির্দেশ মমতার

People's Reporter: তাঁকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণের অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে লজ্জায় মাথা নত করে চলে যেতেন। আমি এখনও করছি কারণ, না-হলে লুটেরারা লুটে নিয়ে চলে যাবে।’’
মমতা ব্যানার্জি
মমতা ব্যানার্জিফাইল ছবি
Published on

ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ১২ নম্বর নথি হিসাবে আধার কার্ডকে সুপ্রিম কোর্ট বৈধতা দেওয়ার পরই বুধবার জলপাইগুড়ি থেকে রাজ্য প্রশাসনকে সরাসরি এই নিয়ে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যাঁদের আধার কার্ড নেই, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁদের অবিলম্বে কার্ড করে দিতে হবে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, এটি গোটা রাজ্যের জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে পাঠানো বার্তা।

ভোটের তালিকা নিয়ে সাধারণ মানুষকে ফের একবার এদিন সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা দেখতে হবে। শুধু এখন দেখলে হবে না। আগামী ৬-৭ মাস দেখতে হবে। ভোটার তালিকায় নাম না-থাকলে ওরা বলবে এনআরসি করিয়ে দাও।’’

প্রসঙ্গত, বিহারে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (SIR) চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেই প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তৃণমূল দলগত ভাবে সেই মামলার অন্যতম পক্ষ ছিল, পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ দলই আধার কার্ডকে বৈধ নথি হিসাবে গ্রহণ করার পক্ষে সওয়াল করেছিল।

শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালত সেই দাবি মেনে নেয়। আধার কার্ডকে ১২ নম্বর নথি হিসাবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেয় আদালত। সোমবার রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবারই জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই বুধবার মমতার নির্দেশ, রাজ্যে যাঁদের এখনও আধার হয়নি, তাঁদের দ্রুত নতুন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়া এদিন জলপাইগুড়ির মঞ্চ থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। আদালতের নির্দেশে রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছিল। সেই আদালতের নির্দেশ মেনেই ফের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই এক দফা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী রবিবার রয়েছে আরেক দফা।

সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে পরীক্ষা হচ্ছে। আর বাকিটা নিয়ে আইনজ্ঞরা আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন। আইনের জটিলতা কেটে গেলেই আমরা সাথে থাকার চেষ্টা করব। এর বেশি আমি এখন আইনত কিছু বলতে পারি না।’’

তিনি আরও স্পষ্ট করে জানান, ৩৫ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে এবং পরবর্তী ধাপে আরও ২১ হাজার পদ পূরণ হবে। তবে একথাও এদিন উল্লেখ করেন, “যখনই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখনই বিরোধীরা কোর্টে যায়। আমি তো চাকরি দিতে চাই, কিন্তু ওরা চায় না। ভোটে পারছে না বলে কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে।”

সমাজমাধ্যমে প্রতিনিয়ত তাঁকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণের অভিযোগ এনে বলেন, ‘‘আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে লজ্জায় মাথা নত করে চলে যেতেন। আমি এখনও করছি (দায়িত্ব পালন) কারণ, না-হলে লুটেরারা লুটে নিয়ে চলে যাবে। ওরা বাংলাকে গুজরাতে পরিণত করতে চায়। আমরা তা হতে দেব না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেউ বাংলাকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারবে না। বাংলাই বাংলা চালাবে। দিল্লি নয়।’’

সভা মঞ্চ থেকে ভিন্‌রাজ্যে কর্মরত বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর আক্রমণের বিরুদ্ধেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ২৪ হাজার পরিবারকে রাজ্যে ফিরিয়ে এনেছে।

মমতা ব্যানার্জি
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনে আধারকে পরিচয় প্রমাণ হিসেবে ধরুন! SIR মামলায় জানাল সুপ্রিম কোর্ট
মমতা ব্যানার্জি
'সারারাত উত্তরকন্যায় পাহারা দিয়েছি, আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন', নেপালে আটকদের বার্তা মমতার

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in