
ফের তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ালো জেলফেরত 'বীরভূমের বাঘ' অনুব্রত মণ্ডল। এবার অনুব্রতর বিরুদ্ধে বোলপুর থানার আইসিকে অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠলো। যা নিয়ে শাসক দলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিল তৃণমূল। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
শুক্রবার বিজেপির রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিজের এক্স মাধ্যমে একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ শেয়ার করেন। ওই কল রেকর্ডিং-এ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে এক পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। অভিযোগ, কলরেকর্ডিং-এ অনুব্রত মণ্ডল বোলপুর থানার আইসিকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। যদিও এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
ভাইরাল হওয়া অডিও শেয়ার করে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, "এই ভাইরাল হওয়া ফোনালাপটি শুনলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, রাজ্যের দুর্দমনীয় এবং দোর্দণ্ডপ্রতাপ মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহের চাদরের তলায় কিভাবে ভয়াবহ সমাজবিরোধী ত্রাস'রা সযত্নে সুরক্ষিত রয়েছে!"
তিনি আরও লেখেন, “বীরভূমের ছাল ছাড়ানো বাঘ”, যার কিনা মাঝে মধ্যেই ব্রেইনে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয় - তিনি একজন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ঠিক কী ভাষায় কথা বলছেন! আর এই কথপোকথন প্রকাশ্যে আসার পর প্রশাসনে কি প্রভাব পড়বে? বড় জোর ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই হয় ওই আধিকারিককে ক্লোজ করা হবে, নাহলে সুন্দরবনে বদলি!
পাশাপাশি সুকান্ত মজুমদার লেখেন, "আমি চাই, পুলিশ মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ও রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমার দ্রুত এই বিষয়ে তদন্ত করে রাজ্যবাসীর কাছে জবাবদিহি করুন। তৃণমূলের নেতাদের কাছে পুলিশ নিজে সুরক্ষিত না হলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা!"
এই অডিও ভাইরাল হওয়ার পরই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। অনুব্রত মণ্ডলের ৫জন হাউজ গার্ডকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৪ জন নিরাপত্তারক্ষীকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকেও অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানানো হয়, "অনুব্রত মণ্ডল একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, তার সঙ্গে আমাদের দল সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছে এবং এই মন্তব্যকেও সমর্থন করছে না। আমরা তাঁর অপমানজনক ও অগ্রহণযোগ্য-অশ্রাব্য ভাষার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দল তাঁকে নির্দেশ দিচ্ছে, তিনি যেন আগামী চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চান, অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি করা হবে।"
প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলকে তৃণমূলের বহু প্রভাবশালী নেতা বিভিন্ন সময়ে 'বীরভূমের বাঘ' বলে সম্বোধন করেছিলেন। এমনকি তিহার জেল থেকে অনুব্রতর বীরভূমে ফেরা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতাদের বলেছিলেন, ‘‘কেষ্ট যখন বেরোবে, তখন ওঁকে বীরের সম্মান দেবে।’’ তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, দলবিরোধী কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে অনুব্রত মণ্ডল হোক বা অন্য কেউ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন