2023 TET: দু'বছর পর প্রকাশিত টেট ২০২৩-এর ফল! পাশের হার মাত্র ২.৪ শতাংশ! শিক্ষাক্ষেত্রে চরম উদ্বেগ

People's Reporter: পরিসংখ্যান বলছে, পরীক্ষায় বসেছিলেন মোট ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৪৭ জন। যার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ৭৫৪ জন।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিফাইল ছবি
Published on

প্রায় দু'বছর পর অবশেষে প্রকাশিত হল ২০২৩-এর টেটের ফলাফল। কিন্তু ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, পাশের হার মাত্র ২.৪ শতাংশ। অর্থাৎ পরীক্ষায় বসেছিলেন মোট ২ লক্ষ ৮০ হাজার পরীক্ষার্থী। যার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ৭৫৪ জন। অর্থাৎ সাত হাজার পরীক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এই হতাশাজনক চিত্র স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষামহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে, ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণরা এখনও নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা হয়েছিল টেট। তারপর কেটে গেছে ১ বছর ৯ মাস। এত দিন ধরে লাগাতার ফল প্রকাশের দাবিতে চলছে আন্দোলন। অবশেষে দূর্গাপুজোর আগে বুধবার প্রকাশিত হল টেটের ফল। এদিন বিকাল ৫টার পর পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ওয়েবসাইটে ফল দেখা যায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো থেকে ওএমআর শিটের ডিজিটাল কপি ডাউনলোড করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।

পরিসংখ্যান বলছে, পরীক্ষায় বসেছিলেন মোট ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৪৭ জন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ প্রার্থীই ৯০ নম্বরের গণ্ডি পার করতে পারেননি। ১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হয়েছে ৯০। কিন্তু বিপুল সংখ্যক প্রার্থী সেই মানদণ্ডে পৌঁছতে না পারায় সফলতার হার এতোটা কমেছে।

তথ্য বলছে, গত কয়েক বছরের টেট ফলাফলের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের পরিসংখ্যান আরও চোখে পড়ার মতো। ২০১৪ সালের টেটে পাশ করেছিলেন প্রায় ২২ শতাংশ পরীক্ষার্থী। ২০১৭ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২২ সালে সেই সংখ্যাটা আরও কমে দাঁড়ায় প্রায় ১২ শতাংশে। এবার ২০২৩ সালে এসে সেই হার একেবারে ২.৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু উত্তীর্ণের হার এত কম কেন? পর্ষদ জানিয়েছে, যাঁরা যা পরীক্ষা দিয়েছেন, তার ফলের নিরিখেই এমন হার। অর্থাৎ প্রশ্নের কঠিনতা বা মূল্যায়নে সমস্যা নয়, বরং প্রার্থীদের যোগ্যতার ঘাটতিই পাশের হার কমে যাওয়ার প্রধান কারণ।

তৃণমূল কংগ্রেস শাসনকালে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি টেট পরীক্ষা হয়েছে। ২০২২ সালের টেটের ফলাফল প্রকাশ হলেও আজও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। যা নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। সেই আবহেই ২০২৩ সালের ফল প্রকাশিত হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের প্রশ্ন, কবে নিয়োগ শুরু হবে?

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—প্রাথমিক স্তরে কর্মরত প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে টেট পাশ করতে হবে। বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক আছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার এখনও টেট উত্তীর্ণ নন। নতুন পরীক্ষার্থীরা যেখানে যোগ্যতা অর্জন করতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে কর্মরত শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

শিক্ষাবিদদের মতে, এত কম পাশের হার রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার মান ও প্রশিক্ষণ কাঠামো নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। টেট শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নয়, এটি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান নির্ধারণের গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তাই এই ফল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার মান নিয়েও শঙ্কা তৈরি করছে।

প্রতীকী ছবি
Kunal Ghosh: তিন মাস চুপ থাকতে হবে কুণালকে! মিঠুনের করা মানহানি মামলায় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
প্রতীকী ছবি
'বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন' - বাঙালি অধ্যাপকের পাশে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা!

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in