
অভিনেতা ও বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে আপাতত কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। ১০০ কোটির মানহানির মামলায় এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার শুনানিতে আদালত জানিয়েছে, আগামী তিন মাস মিঠুন বা তাঁর পরিবারের কাউকে নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে কুণালকে। ডিসেম্বরে ফের এই মামলার শুনানি হবে।
ঘটনার সূত্রপাত একটি মানহানি মামলা ঘিরে। মিঠুন চক্রবর্তী কুণালের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও কুরুচিকর মন্তব্য করে তাঁর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছেন কুণাল ঘোষ। কেবল তাঁকেই নয়, তাঁর পরিবারকেও কুরুচিকর আক্রমণ করেছেন কুণাল। এর ফলে অভিনেতা তথা বিজেপি নেতাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। এমনকি তাঁর পেশাগত ক্ষেত্রেও—নতুন ছবি ও বিজ্ঞাপনের সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ মিঠুনের।
বুধবার বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ছিল মামলার শুনানি। এদিন আদালতে মিঠুনের আইনজীবী সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেল রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান—পদ্মভূষণ ও দাদাসাহেব ফালকের মতো পুরস্কারে ভূষিত। এমন একজন ব্যক্তিত্বের নামে ধারাবাহিক কুৎসা চলতে পারে না। প্রকাশ্যে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলছে।
আদালত জানায়, কুণাল ঘোষকে এই মামলায় নোটিস পাঠাতে হবে এবং আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। পরবর্তী শুনানি সেই দিনেই হবে।
প্রসঙ্গত, মিঠুনের বিরুদ্ধে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন কুণাল। এছাড়া মিঠুনের ছেলে ধর্ষণ মামলায় জড়িত—এরকম দাবি পর্যন্ত করেছিলেন তিনি। মিঠুনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে বলেও দাবি করেছিলেন কুণাল। মিঠুন প্রথমে আইনি নোটিস পাঠালেও, পরে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে যান।
কুণাল অবশ্য এতদিন নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। মানহানির মামলা দায়ের হওয়ার পরেও তিনি বলেছিলেন, “যাঁর মান থাকে, তিনি কি এতবার দলবদল করতে হয়? কোর্টে দেখা হবে।” তবে আদালতের নির্দেশে এখন তাঁকে অন্তত তিন মাসের জন্য চুপ থাকতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন