
দিল্লির সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় (SAU) থেকে বহিষ্কৃত বাঙালি অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্যকে পুনরায় নিয়োগের দাবিতে সরব হলেন কেন্দ্রীয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন এবং ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরা। অবিলম্বে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।
পড়ুয়াদের আন্দোলনকে 'সমর্থন' করায় প্রায় দু’বছর সাসপেনশনে ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্য। সম্প্রতি তাঁকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন।
অধ্যাপকদের সংগঠন ফেডারেশন অফ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনস (FCUTA) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, দিল্লি হাইকোর্টে কড়া ভর্ৎসিত হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ একই সঙ্গে অভিযোগকারী, বিচারক, জুরি এবং শাস্তিদাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। সংগঠনের অভিযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বৈরতন্ত্র চালু করার অপচেষ্টা চলছে, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ স্নেহাশিস ভট্টাচার্যের বহিষ্কার। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
শুধু শিক্ষক সংগঠনই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১০১ জন প্রাক্তনীও স্নেহাশিস ভট্টাচার্যের পক্ষে সরব হয়েছেন। বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এই প্রাক্তনীরা SAU-এর প্রেসিডেন্ট এবং কার্যনির্বাহী পরিষদকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তদন্ত প্রক্রিয়া পক্ষপাতদুষ্ট ছিল।
সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালে বৃত্তি বৃদ্ধির দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পুলিশ ডাকার অভিযোগ ওঠে। পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন স্নেহাশিস ভট্টাচার্য সহ কয়েকজন অধ্যাপক। এর পরেই তাঁদের শোকজ করা হয়।
পরবর্তী সময়ে চারজন অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হলে দিল্লি হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা করে। তবু কর্তৃপক্ষ নতুন করে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করে তদন্ত চালায় এবং গত আগস্টে স্নেহাশিসকে শোকজ নোটিস পাঠায়। অভিযোগ, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তাঁকে না দিয়েই এই নোটিস জারি করা হয়। শেষে চলতি সেপ্টেম্বরেই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।
প্রসঙ্গত, স্নেহাশিস ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর বক্তব্য, কোনও ‘দোষ’ তিনি করেননি। তাঁর মামলাটি এখনও দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন