
আদানি সংক্রান্ত সমস্ত কনটেন্ট মুছে ফেলার কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ বাতিল করল দিল্লির রোহিনী আদালত। পাশাপাশি এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেছে আদালত।
৬ সেপ্টেম্বর দিল্লির একটি আদালত আদানি সম্পর্কিত বহু প্রতিবেদন, ভিডিও ও সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি সাংবাদিকদের ভবিষ্যতে এমন কোনো বিষয় প্রকাশ করতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ওই নির্দেশের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ১৩৮টি ইউটিউব ভিডিও ও ৮৩টি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট অপসারণের নোটিস জারি করে। যা বাতিল করল দিল্লির রোহিণী আদালত।
নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন সাংবাদিক রবি নায়ার, অবির দাশগুপ্ত, আয়স্কান্ত দাস ও আয়ুষ জোশী। তাঁদের আবেদনের শুনানিতেই এই নির্দেশ দিল আদালত।
বিচারপতি আশীষ অগরওয়াল বলেন, সাংবাদিকদের বক্তব্য শোনার সুযোগ না দিয়েই নিম্ন আদালত এমন নির্দেশ দিয়েছিল, যা একপ্রকার তাঁদের প্রতিবেদনকে প্রাথমিকভাবেই মানহানিকর ঘোষণা করে দেওয়ার সমান। তিনি সতর্ক করে দেন যে, এমন সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে অপ্রয়োজনীয় প্রমাণিত হলে তার ফলাফল “অপরিবর্তনীয় ক্ষতি” ডেকে আনতে পারে, কারণ সরানো কনটেন্ট পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।
সাংবাদিকদের পক্ষের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার যুক্তি দেন, অধিকাংশ প্রতিবেদন ২০২৪ সালের জুন মাস থেকেই প্রকাশ্যে রয়েছে। হঠাৎ কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে একতরফা এমন নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে, আদানি এন্টারপ্রাইজেসের আইনজীবী বিজয় অগরওয়াল অভিযোগ করেন যে সাংবাদিকরা “খারাপ প্রচার অভিযান” চালাচ্ছেন।
আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এই রায় কেবল চার সাংবাদিকের আবেদনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সিনিয়র সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতার দাখিল করা পৃথক মামলার বিষয়ে আদালত এখনও রায় সংরক্ষিত রেখেছে।
প্রসঙ্গত, নিম্ন আদালতের নির্দেশ মেনে গত ১৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক আদানি সম্পর্কিত কনটেন্টগুলি মুছে ফেলার জন্য নির্দেশিকা জারি করে। সেই নোটিশে বলা হয় - “আদালতের আদেশ মান্য করতে আপনাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং এই চিঠি ইস্যুর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রককে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা দিতে হবে।” এই নোটিশের কপি মেটা ও গুগলকেও পাঠানো হয়।
মন্ত্রকের চিঠি অনুযায়ী, এই নির্দেশ দ্য ওয়্যার, নিউজলন্ড্রি - এই দুই নিউজ পোর্টালকে এবং সাংবাদিক রবিশ কুমার, অজিত অঞ্জুম, ধ্রুব রাঠি, আকাশ ব্যানার্জি (দেশভক্ত নামে বেশি পরিচিত) ও আরও কয়েকজন কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের উপর প্রযোজ্য হয়।
আদানি সংক্রান্ত একাধিক রিপোর্ট প্রথম প্রকাশ্যে আনা প্রবীণ সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা জানিয়েছিলেন, “ভারতের বিচারব্যবস্থার উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড আমার বিরুদ্ধে যে মানহানির মামলা করেছে, আমি আদালতে তার জোরালোভাবে লড়াই করব।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন