
আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত, পুরসভা, সমবায়, ক্লাব, বিধানসভা, লোকসভা – সব জায়গায় ভোটচুরি হচ্ছে। যারা ভোটচুরি করছে তারাই আবার দিল্লিতে গিয়ে ভোটচুরি নিয়ে হল্লা করছে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)।
এদিন সেলিম বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলেছি ভুয়ো ভোটার, মৃত ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। কিন্তু একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। আমাদের রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি একসঙ্গে ভোটে কারচুপি করেছে। ডায়মন্ডহারবারে সবথেকে বেশি ভোট লুট হয়েছে। ডায়মন্ডহারবার মডেলে যে সবচেয়ে বেশি ভোট লুট করেছিল সে এখন দিল্লিতে গিয়ে ভোট লুটের বিপক্ষে বলছে! পকেটমাররা নিজেদের সঙ্গীদের বাঁচাতে এরকমই করে।
তিনি আরও বলেন, তৃণমূল দখলদারির রাজনীতি করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লাগাতার আন্দোলন চলবে। এসআইআর নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি দরকার রেড ভলান্টিয়ারদের মতো বুথ স্তরে সহায়তার ব্যবস্থা করা।
এদিন এসআইআর (SIR) প্রসঙ্গে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, এসআইআর ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আদালতে প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে অ্যাফিডেবিটের জন্য। হায়দরাবাদের এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে নামের বানানের ভুলের জন্যও বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটদাতাদের নাম।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) রাজ্য সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোট এলেই তিনি বারবার বাংলায় আসবেন। গত তিনটি ভোটের আগেই তিনি বারবার বাংলায় এসেছেন। শুধু বাংলা নয়, তিনি বিহারেও গেছেন। এমনকি পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের পর সেখানে না গিয়ে তিনি বিহারে চলে গেছেন নির্বাচনী প্রচারের জন্য। মোদী বাংলায় আসছেন সরকারি কাজের অজুহাত দেখিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে।
সেলিম বলেন, মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) যেমন সরকারি সভাকে দলীয় কাজের জন্য, ভোটের প্রচারের জন্য ব্যবহার করেন সেই একই কায়দায় মোদীও তাই করছেন। মোদী যে মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, তা অতীতে বামপন্থী সাংসদদের লাগাতার দাবির ফলে হয়েছে।
এদিন তিনি জানান, আমেরিকা পঞ্চাশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারতের উপর। আমাদের দেশের বিদেশনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে চলবে না। এশিয়া মহাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দাদাগিরি চলবে না। বিশেষ করে প্যালেস্তাইনের উপর যেভাবে লাগাতার আক্রমণ চলছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ১ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শান্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এবারেও ওইদিন কলকাতায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে বিরাট সমাবেশ সংঘটিত হবে। বিভিন্ন বামপন্থী দল গণসংগঠন একত্রে কলকাতায় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের সংহতিতে সমাবেশ করবে।
বৃহস্পতিবার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা এবং কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভি এস অচ্যুতানন্দনের (V S Achuthanandan) স্মরণসভার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন