
ফের পিছয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলপ্রকাশ। নেপথ্যে সেই ওবিসি জট। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, নতুন ওবিসি তালিকা অনুযায়ী মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। পুরানো তালিকা মেনেই প্রকাশ করতে হবে ফল। পাশাপাশি, আরও ১০টি পরীক্ষার ফলপ্রকাশ নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা।
ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অনেক দিন ধরেই আটকে রয়েছে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল ঘোষণা। অবশেষে জটিলতা কাটিয়ে ৭ আগস্ট, বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণা হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এদিনই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মামলায় নতুন ওবিসি তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
তিনি মন্তব্য করেন, "আপাতত নতুন ওবিসি তালিকা মেনে ১০টি পরীক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রকে মান্যতা দিয়েই"। যার ফলে আজ প্রকাশিত হচ্ছে না জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল। এছাড়াও জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড আয়োজিত আরও একাধিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশও আটকে গেল এর জেরে। যার ফলে অনিশ্চিয়তার মুখে রাজ্যের প্রায় তিন লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।
গত বছর এপ্রিল মাসে কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছিল, ২০১০ সালের পর যত ওবিসি শংসাপত্র জারি হয়েছে, তা বাতিল করা হবে। যেহেতু ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্রগুলি বৈধ, তাই জয়েন্ট এন্টান্স বোর্ডের মামলায় এর আগে বিচারপতি চন্দ জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালের আগের ওবিসি তালিকা মেনেই ফলপ্রকাশ করা যাবে।
যদিও সেই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালত। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিচারপতি চন্দ বলেন, কেন যথাসময়ে হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? সে সময় হাই কোর্টের নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও দেয়নি। অর্থাৎ আদালতের রায় অমান্য করা হয়েছে।
এদিনের শুনানিতে হাইকোর্টের আরও পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পর মাত্র কয়েক দিনে কী ভাবে সকলকে ওবিসি শংসাপত্র প্রদান করা সম্ভব হল? আবেদন, যাচাই— সব প্রক্রিয়া কী ভাবে এত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব হল? অর্থাৎ মেধাতালিকা সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। ফলে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না।
গত ২৭ এপ্রিল রাজ্য জয়েন্ট এট্রান্স পরীক্ষা হয়েছিল। সাধারণত তিন মাস পরে ফলপ্রকাশ হয়। কিন্তু এবার তিনমাস কেটে যাওয়ার পরেও হয়নি ফলপ্রকাশ। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। শুধু ইঞ্জিনিয়ারিংয় নয়, এই ওবিসি সার্টিফিকেটের জেরে বিটেক, বিফার্ম, বিআর্কিটেকচার, নার্সিং, প্যারামেডিক্যাল, জয়েন্ট এন্ট্রান্স ল্যাটেরাল এন্ট্রি টেস্ট (জেইএলইট), প্রেসিডেন্সির স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফল নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন