
ফের উত্তাল রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ। বিক্ষোভ দেখানোর জেরে সাসপেন্ড হলেন চার বিজেপি বিধায়ক - অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ, মনোজ ওঁরাও এবং শঙ্কর ঘোষ। তাঁদের বার করে দেওয়ার জন্য মার্শাল ডাকেন স্পিকার। মার্শালদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে কক্ষের ভিতরে পড়ে যান বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। অভিযোগ, এর ফলে বিধায়কের চমশা ভেঙে যায়। এরপরেই কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। সাসপেন্ডের প্রতিবাদে বিধানসভা গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপির পরিষদীয় দল। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এসে জানান, মঙ্গলবার, অধিবেশনের শেষ দিনে ধর্না দেবেন বিজেপি বিধায়করা।
বিধানসভায় চলছে বাদল অধিবেশন। মঙ্গলবার যার শেষ দিন। তার আগে সোমবার ফের উত্তপ্ত অধিবেশন কক্ষ। অভিযোগ, বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক শঙ্কর ঘোষকে 'মেনশন' পর্বে বলতে দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। অভিযোগ, কাগজ ছিঁড়ে ‘প্রতিবাদ’ জানান বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মণ। বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করার হুঁশিয়ারি দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল বিধায়করাও চিৎকার শুরু করেন।
এর মাঝেই মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কালীগঞ্জে হারল কে?’’ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের অনুরোধে চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। মার্শাল ডাকা হয় চার বিধায়ককে বার করে দেওয়ার জন্য। সেই সময় ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে যান বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিজেপির অভিযোগ, বিধায়কের চমশা ভেঙে গেছে। কক্ষ থেকে বার করে দেওয়া হয় বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীকেও।
এই আবহে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে অরূপ বিশ্বাস এবং বিজেপি বিধায়কেরা পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন। এই আবহেই নেতাজি সুভাষ ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয় কক্ষে। বক্তৃতা দেন তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। এই পরেই কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
ঘটনা চলাকালীন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ঘোষ। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসের কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। গোলমালের খবর পেয়েই বিধানসভায় পৌঁছান তিনি। সে সময় বিধায়কেরা গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভে যোগ দেন তিনি। এরপরেই স্পিকারের কাছে যান শুভেন্দু। স্পিকার জানিয়ে দেন, অধিবেশনে সমস্যা তৈরি করা যাবে না। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘ক্যাডারদের দিয়ে মিহির গোস্বামীকে বার করে দেওয়া হয়েছে। একাধিক বিধায়কের উপর আক্রমণ হয়েছে"। বিরোধী দলনেতা আরও জানিয়েছেন, "আমি শঙ্কর ঘোষের চশমা, শান্তনু প্রামাণিকের চশমা, কাঞ্চন মৈত্রের ঘড়ি প্রমাণ স্বরূপ স্পিকারের কাছে রেখেছি। স্পিকার বলছেন, বিরোধী দলনেতাকে বার করে দাও। এটা ভাষা!"
তিনি আরও জানান, "২০ জন মহিলা রক্ষী দিয়ে আমাকে ঘেরাও করা হয়। ওঁরা চেয়েছিলেন, আমি মহিলাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়াই। আমি হাত পকেটে রেখেছিলাম। বলেছিলাম, ধাক্কা মেরে জোর করে বার করতে হবে। দাঁড়িয়ে ধর্না চালাই"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন