
কসবা কাণ্ডের আবহে এবার রাজ্যের সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম তালাবন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই মর্মে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে নোটিশ জারি করতে হবে। বৃহস্পতিবার এক মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি, ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। দু'সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে হলফনামা। আগামী ১৭ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হয়নি ছাত্র সংসদ নির্বাচন। যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী তথা সিপিআইএম নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। শুনানিতে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এই মর্মে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে নোটিশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, জরুরী কোনও প্রয়োজন হলে রেজিষ্টারের কাছে আবেদন করতে হবে। তাছাড়া ইউনিয়ন রুম তালাবন্ধ অবস্থায় থাকবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর অনেকেই মনে করছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ইউনিয়ন রুম খোলা যাবে না, এমনটাই নির্দেশ আদালতের। যদিও দুই বিচারপতির মুখে একথা শোনা যায়নি।
এর আগে চলতি বছর মার্চে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেসময় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করেছিলেন। মামলাকারীর আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছিলেন, নিয়মে বলা রয়েছে, নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে হবে। কিন্তু বহু বছর ধরে নির্বাচন প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে।
যদিও এর প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য জানিয়েছিল, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, “কিছু অবস্থান নিন। নির্বাচন করা হচ্ছে না। পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে"।
সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার ল কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। যার ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কলেজের এক প্রাক্তনী। বাকি দু'জন বর্তমান ছাত্র। সকলের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের যোগ রয়েছে। প্রাক্তনীর ওই কলেজে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
উল্লেখ্য, ঘটনার দিন নির্যাতিতাকে ইউনিয়ন রুমে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর বিরোধীরা ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়াকে দায়ী করছে। আঙুল তুলছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের দিকে। এই আবহে বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন রুম তালাবন্ধ রাখার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন