ক’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরেই পদ পেয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর এবার সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে ফিরলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁরই সঙ্গে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। যারা দু’জনেই একসঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। সোমবারের এই ঘরে ফেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
শোভন এবং বৈশাখীর তৃণমূলে ফেরা প্রসঙ্গে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা দলে ফেরার আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপরেই দলীয় নেতৃত্ব তাঁদের ফিরে আসা অনুমোদন করে। এদিন তৃণমূলে যোগ দেবার পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২১ সালে বিজেপিতে গিয়েছিলেন শোভন ও বৈশাখী। দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও কখনই তিনি সেই দলে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও বিজেপির তরফে প্রস্তাব ছিলো বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করার। যাতে তিনি রাজী হননি। অন্যদিকে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দাঁড়াতে চেয়েছিলেন কলকাতার কোনো একটি কেন্দ্রে। যদিও কলকাতার কোনো কেন্দ্রেই তাঁর নাম বিবেচনায় আনেনি বিজেপি। প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম বিবেচিত হয়নি বলেই জানা গেছিল। এই দুই ঘটনায় দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এরপরেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেন।
মাঝে একাধিকবার তাঁর তৃণমূলে ফেরার গুঞ্জন তৈরি হলেও তা এতদিন বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতিতে তাঁরা ‘ঘরে’ ফিরলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই হিসেবে সাত বছর পর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেন।
দলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয়েছে দলের কর্মীদের মধ্যে। গুঞ্জন উঠেছে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।
একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিকদের বৃত্তে থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায় ক’দিন আগেই দার্জিলিং-এ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং তারপরেই তাঁকে নিউ টাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটির (NKDA) চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা হয়। এরপর সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার তিনি এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগদান করলেন।
এদিন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দলে ফেরার সাংবাদিক সম্মেলনে অরূপ বিশ্বাস বলেন, “ঘরের ছেলে আজ ঘরে ফিরছেন”। শোভন চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে বলেন, যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইবেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চাইবেন, সেভাবেই কাজ করবো। আগামী দিনে আমার ওপর যে দায়িত্ব দলীয়ভাবে দেওয়া হবে আমি তাই পালন করব। দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবো। চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখবো না। আমি মনে করি এটা আমার কর্তব্য।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন