
আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক দেবাশিস হালদার। এবার সেই চিকিৎসককেই পোস্টিং করা হল মালদার গাজোলে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ, কাউন্সেলিংয়ে হাওড়ায় নিয়োগের কথা জানালেও মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা গিয়েছে দেবাশিসের পোস্টিং হয়েছে গাজোলে। জুনিয়র চিকিৎসকের অভিযোগ, তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, গাজোলের ওই হাসপাতালে কোনও শূন্যপদ ছিল না। অথচ সেখানে বদলি করা হল তাঁকে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট।
দেবাশিস হালদার এতদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার ছিলেন। এবার তিনি অন্যত্র যোগ দিতে চলেছেন। সিনিয়র রেসিডেন্ট নিয়োগের নিয়ম হল, স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকে একটি কাউন্সেলিং করা হয়। যেখানে ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কোথায় পোস্টিং চাইছেন। সেই নিয়ম মেনে দেবাশিস জানিয়েছিল, তিনি হাওড়া জেলা হাসপাতালে পোস্টিং চান।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পোস্টিংয়ের জন্য প্রাথমিক বন্ড জমা দেন দেবাশিস। যেখানে স্বাক্ষরও করেন দেবাশিস। কিন্তু অভিযোগ, মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা গিয়েছে, তাঁর পোস্টিং বদলে গিয়েছে। হাওড়ার পরিবর্তে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে মালদার গাজোলের একটি হাসপাতালে।
চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফ্রন্টের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে। কারণ গত ২৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ মার্চ মোট ৭৭৮ জন চিকিৎসক কাউন্সেলিংয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের কারও পোস্টিং বদলানো হয়নি। কেবল দেবাশিসের বদলানো হয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফ্রন্ট-এর আরও দাবি, কাউন্সেলিংয়ের আগে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের শূন্যপদের যে তালিকা বেরিয়েছিল, সেখানে গাজোলের ওই হাসপাতালের নাম ছিল না। গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য দফতরের শূন্যপদের তালিকা অনুযায়ী, অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে ৮৮টি শূন্যপদ রয়েছে। সেই তালিকায় সিলামপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়া মালদহের অন্য কোথাও কোনও শূন্যপদ নেই। তা সত্ত্বেও মেধাতালিকায় দেখা যাচ্ছে, দেবাশিসকে বদলি করা হয়েছে গাজোলে।
এনিয়ে দেবাশিস সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘এত জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হল, অথচ কেবল আমার ক্ষেত্রেই দেখা গেল নামের পাশে হাসপাতালের নাম বদলে গিয়েছে! প্রতিহিংসা ছাড়া এর নেপথ্যে আর কোনও কারণ দেখছি না। কারণ, এই ঘটনার কোনও যৌক্তিকতাই নেই"। এমনকি আইনের সাহায্য নেবে বলেও জানিয়েছেন দেবাশিস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন