
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কোন কোন 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে পড়াতে পারবেন, সেই তালিকা ডিআই অফিসে পাঠিয়েছে এসএসসি। নতুন সেই তালিকায় নাম রয়েছে ১৫ হাজার ৪০৩ জনের। তবে তালিকায় নাম নেই ‘যোগ্য’ বলে দাবি করা, চাকরিহারাদের এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মন্ডল-সহ প্রায় ১২ জনের। কেন তালিকায় নাম নেই, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে নতুন করে আন্দোলন শুরু করলেন তালিকায় নাম না থাকা 'অযোগ্য' শিক্ষকরা।
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ নন, এমন শিক্ষক-শিক্ষিরা স্কুলের যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন তাঁরা। তবে মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরই মধ্যে তাঁদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে হবে, যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতি বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আদালতের সেই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার যোগ্যদের তালিকা প্রস্তুত করে বিভিন্ন জেলার ডিআই দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। তবে সেই তালিকায় নিজেদের নাম খুঁজে পাননি চিন্ময়-সহ ১২ জন। নতুন এই তালিকায় কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে তাঁদের। যাঁদের নাম আসেনি গুগল ফর্মের মাধ্যমে তাঁদের নাম রোল নম্বর-সহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তা ফের পাঠানো হবে এসএসসির কাছে বলে জানা গেছে।
এনিয়ে চিন্ময় মন্ডল বলেন, “কনভেনরের জায়গা থেকে বলছি, যেহেতু এসএসসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখেছি তৃতীয় কাউন্সিলিং-এর পরের নিয়োগ নিয়ে একটা সন্দেহজনক জায়গা রয়েছে তাই একটু আলাদা করেই দেখা হবে দুটো অংশকে”। জানা যাচ্ছে, তিনি নিজেও চতুর্থ কাউন্সিলিংয়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
তবে নতুন তালিকায় যোগ্যরা বাদ পড়া নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করেছেন চাকরিহারারা। চিন্ময়ের কথায়, ‘‘যাঁরা নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করছেন, কিন্তু তালিকায় নাম আসেনি, আমরা তাঁদের নাম সংগ্রহ করছি। একটি তালিকা তৈরি করছি। এসএসসিকে সেই তালিকা পাঠাব। যোগ্যরা যাতে চাকরি ফিরে পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
অন্যদিকে, সমাজমাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হবার কথা বলেছেন অধিকার মঞ্চের অন্যতম সদস্য মেহেবুব মন্ডল। তিনি জানান, “এখানে রাজনীতি করে বিভাজন করার প্রচেষ্টা চলছে। বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দলেরও কিছুজন আছেন, যারা আমাদের মধ্যে থেকেই বিভেদ তৈরি করছে”।
এদিকে, এসএসসি তালিকা প্রকাশ করার পর স্কুলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন আন্দোলনকারীরা। চাকরিহারা শিক্ষিকা রূপা ব্যানার্জী জানিয়েছেন, “একটা অংশ অবশ্যই এবার স্কুলে যাবেন। আমার নামও রয়েছে, আমিও স্কুলে যাব। কিন্তু তার সঙ্গে আন্দোলনেও থাকব। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁরা বিরতি নিতে পারেন। তার জায়গায় অন্যেরা আসবেন। কারণ এটা স্বস্তির কথা নয়। আমাদের চাকরিটা মূলত নেই। তাই আসল লড়াই ৩১ তারিখ পর্যন্ত নয় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্বাভাবিক অবসরের সময়সীমা পর্যন্ত চাকরিটা নিশ্চিত করা”।
অন্যদিকে এই তালিকায় যাদের নাম নেই, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে নতুন করে আন্দোলন শুরু করলেন সেই ‘অযোগ্য’রা।তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে আদালতে ওএমআরে কারচুপির বিষয়টি এখনও প্রমাণিত হয়নি, সেখানে এসএসসি কী করে তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে দাগিয়ে দিয়ে বেতন বন্ধ করে দিতে পারে? এই নিয়ে এসএসসি ভবনের অদূরেই পৃথক অবস্থানে বসেছেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন