
কেন্দ্রীয় ওবিসি তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে রাজ্যের ৩৫টি ওবিসি সম্প্রদায়ের গোষ্ঠী। যার মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের। যা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে একযোগে আক্রমণ করলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সম্প্রতি জানা গেছে চুড়িহার, কালওয়ার, নিকারি (মুসলিম), মহলদার (মুসলিম), ঝুকরে (মুসলিম), বসনি (মুসলিম), আবদাল (মুসলিম), কান (মুসলিম), তুতিয়া (মুসলিম), গায়েন (মুসলিম), বেলদার মুসলিম, খোট্টা মুসলিম, মুসলিম সরদার, মুসলিম কালান্দর, মুসলিম লস্কর, মুসলিম জমাদার, মুসলিম দফাদার, মুসলিম ছুতোর মিস্ত্রি মাল মুসলিম, মুসলিম হালদার মাঝি পাটনি মুসলমান, মুচি/চামার মুসলিম, মুসলিম নেহারিয়া, মুসলিম সানপুই/সাপুই, মুসলিম বিশ্বাস, মুসলিম মালি, ঘোসি (মুসলিম), মুসলিম ওস্তাগর/দরজি/ইদ্রিশি, মুসলিম রাজমিস্ত্রি, মুসলিম ভাটিয়ারা, মুসলিম মোল্লা, ঢালি (মুসলিম), মুসলিম পিয়াদা, মুসলিম বারুজীবী/বারুই, মুসলিম পেঁচি, এই গোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় বিচার মন্ত্রকের অধীন জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন।
এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মহম্মদ সেলিম। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় ওবিসি তালিকা থেকে ৩৫টি জনগোষ্ঠীকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বাঙালি মুসলিম জনগোষ্ঠী। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার ওবিসি তালিকা নিয়ে জালিয়াতি করেছে এবং অনগ্রসর সংখ্যালঘুদের ওবিসি সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে দীর্ঘদিন ধরে।"
তিনি আরও জানান, "রাজ্যের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য জাল সার্টিফিকেট বিলি করা হয়েছে। হাইকোর্ট সব জাল সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আদালতের নির্দেশ মেনে সংশোধন না করে সমস্ত অনগ্রসর মুসলিমদের চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন।"
তিনি বলেন, ভি পি সিং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ এবং তারপরে ইউপিএ সরকারের সময়ে রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশ মেনে ধর্মের ভিত্তিতে নয়, পেশা এবং অনগ্রসরতা অনুযায়ী জনগোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি-এ এবং ওবিসি-বি ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন কীসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল? বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালীন পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা হয়েছিল, ওবিসি-এ ক্যাটাগরিতে ১০ শতাংশ এবং ওবিসি বি ক্যাটাগরিতে ৭ শতাংশ সংরক্ষণের আইন করা হয়। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির সরকার এসেই সেই আইন তছনছ করে।
তাঁর কথায়, মমতা ব্যানার্জি হিজাব পরে ইফতারে গেলেও উনি মুসলিমদের উন্নয়নের জন্য কিছুই করেন না। বরং সার্টিফিকেট নিয়ে জালিয়াতি করে তাঁদের সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন