

যাদবপুরের পোস্ট অফিসে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ। জানা গেছে, প্রায় ৭০ জন গ্রাহকের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন রিজেন্ট এস্টেট পোস্ট অফিসের এক এজেন্ট। ভুয়ো পাসবই তৈরি করে বছরের পর বছর ধরে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়েছেন অভিযুক্ত। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ওই এজেন্ট সিদ্ধার্থ করঞ্জাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে পোস্ট অফিসের নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন স্থানীয় বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, টাকা জমা ও তোলার সমস্ত কাজ করতেন ওই এজেন্টই। সম্প্রতি কয়েকজন গ্রাহক যখন পোস্ট অফিসে গিয়ে তাঁদের পাসবই যাচাই করেন, তখনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। জানা যায় পাসবইগুলো ভুয়ো।
বিষয়টি প্রথমটি নজরে আসে পোস্ট অফিসের বর্তমান পোস্ট মাস্টারের। তিনিই জানান, পাসবইগুলিতে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প ও নথি সবই নকল।
প্রতারিত গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছেন অভিজিৎ মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, “বছরের পর বছর ধরে পরিবারের সঞ্চয় পোস্ট অফিসে রেখেছিলাম। প্রথমে করঞ্জাই পরিবারেরই আর এক সদস্য আমাদের কাজ দেখতেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে সিদ্ধার্থ দায়িত্ব নেয়। আমরা ওকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু এখন দেখি, সব পাসবই জাল। প্রায় তিন কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।”
আর এক ভুক্তভোগী পার্থ পাল বলেন, “আমার মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে দশ লক্ষ টাকা তুলে নেয় ওই এজেন্ট। আগের পোস্ট মাস্টারও জানতেন বলে সন্দেহ করছি। সব মিলিয়ে এটা কোনো একক ব্যক্তির কাজ বলে মনে হয় না।”
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধার্থ করঞ্জাই গ্রাহকদের দেওয়া চেক ব্যবহার করে নিজেই তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতেন। ওই অর্থ নিজের নামে খোলা একাধিক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি পোস্ট অফিসের স্ট্যাম্প ও সিলমোহর ব্যবহার করে পাসবইয়ে জমার ভুয়ো এন্ট্রি দিতেন তিনি, যাতে কেউ সন্দেহ না করেন।
গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, এই প্রতারণার পেছনে পোস্ট অফিসের কিছু অভ্যন্তরীণ কর্মচারীও যুক্ত থাকতে পারেন। বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সিলমোহর ও কাগজপত্র কীভাবে জালিয়াতের হাতে এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন