
আলিপুর চিড়িয়াখানায় মাত্র এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যু হল দুই বাঘিনীর। এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি উঠে আসছে একাধিক সংশয়। ইতিমধ্যেই সেন্ট্রাল জু অথরিটির নির্দেশে শুরু হয়েছে তদন্ত। মৃতদেহ দু’টি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ১৭ বছরের বাঘিনী ‘পায়েল’। ২০১৬ সালে ওড়িশার নন্দনকানন চিড়িয়াখানা থেকে আলিপুরে আনা হয়েছিল তাকে। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিল পায়েল। অসুস্থতার কারণে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছিল, খাবারও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়।
এর পরের দিন, বুধবার সকালে মারা যায় আর এক বাঘিনী ‘রূপা’। আলিপুর চিড়িয়াখানাতেই জন্ম হয়েছিল রূপার। তার মা ছিল ডোরাকাটা বাঘিনী ‘কৃষ্ণা’ এবং বাবা সাদা বাঘ ‘অনির্বাণ’। প্রায় ২১ বছর বয়স হয়েছিল রূপার। বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিল সে। কয়েক বছর আগে তার একটি পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। পায়েলের মৃত্যুর পরদিনই মারা যায় রূপা।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই বাঘিনীর মৃত্যুতে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে বাঘিনীদের। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিতভাবে জানার জন্য ভিসেরা পরীক্ষা জরুরি। তাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত রহস্য কাটছে না।
চিড়িয়াখানার প্রাণী সংরক্ষণ ও পরিচর্যার মান নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তদন্তের ফলাফলই স্পষ্ট করবে, আসলেই বার্ধক্যের কারণে মৃত্যু হয়েছে, নাকি অন্য কোনও কারণ এর নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিড়িয়াখানার জমি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে। গত কয়েক বছরে চিড়িয়াখানার বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীও উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিয়ে বাঘিনীর মৃত্যুতে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন