মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির সরাসরি বিরোধিতা করে ‘মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন’ বলে জানালেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মঙ্গলবার দলীয় রাজ্য দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। উনি বলেছেন, তাঁর আমলে দু’কোটি চাকরি হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজ্য থেকে ছেলে মেয়েরা কাজের জন্য অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। বেকার ছেলেমেয়েরা চাকরির দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্য রাজ্যে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। যত মিথ্যে তিনি বলেছেন, সব ধরা পড়েছে।” প্রসঙ্গত, এদিনই মুখ্যমন্ত্রী সরকারি সাফল্যের খতিয়ান দিতে গিয়ে দাবি করেন তাঁর আমলে রাজ্যে দু’কোটি চাকরি হয়েছে। এক কোটির বেশি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে নিয়ে আসা হয়েছে।
এদিন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, রাজ্য সরকার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাক কোন দপ্তরে, কোন ক্ষেত্রে কত নিয়োগ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রথম পাঁচ বছরে বিশ্বের মধ্যে প্রথম সব থেকে কম সময়ে সব থেকে বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে যে দাবি করেছেন, সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, কীভাবে আনা হয়েছে তা জানাক সরকার।
এদিন রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেই পুলিশের চাকরির পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়েছে। এর আগে এসএসসি-র পরীক্ষাতেও দুর্নীতি দেখেছে রাজ্য। স্কুল সার্ভিস কমিশন, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতি হয়েছে। আর এই সবের বিরুদ্ধেই রাজ্য জুড়ে এখন ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ চলছে। আমরা যখন রাজ্যের সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে পথে নেমেছি তখন তৃণমূল বিজেপি হিন্দু মুসলিম করে যাচ্ছে।
রাজ্যের এসআইআর প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, কেন আগে থেকে মৃতদের নাম বাদ দিয়ে এসআইআর ফর্ম বিলি করা হয়নি? সেই নাম বাদ দিয়ে ফর্ম বিলি করা হলে মৃতদের ফর্ম কোথাও যেত না। ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেই তালিকা তৈরি করার জন্য সবার আগে মৃতদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া প্রয়োজন ছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা মানুষের ভোটাধিকার রক্ষার কথা বলছি। সাধারণ মানুষের নাগরিকতার প্রশ্ন তুলে দেওয়া হচ্ছে। কমিশন এই সংকট তৈরি করেছে। আরএসএস যা চাইছে, বিজেপি যা চাইছে, এ রাজ্যে তা করছে রাজ্য সরকার।
এদিন কেন্দ্রের নতুন সঞ্চার সাথীর সমালোচনা করে এবং এই অ্যাপ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকারের টেলিকমিউনিকেশন দপ্তর সবাইকে সঞ্চার সাথী অ্যাপ ডাউনলেোড করতে বলছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সংবিধান বিরোধী। নাগরিকদের ব্যাক্তিগত বিষয়ে সরকার কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যে কোন দক্ষিণপন্থী সরকার এই কাজ করে। এই নজরদারি করার মত কোনও নিজস্ব পরিকাঠামো সরকারের নেই। দেখা যাবে হয়তো কোনও মার্কিন বা ইজরায়েলি সংস্থাকে এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাজ্যে চলা বাংলা বাঁচাও যাত্রা প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, মানুষের সমর্থন নিয়ে রাজ্যে বাংলা বাঁচাও যাত্রা চলছে। আজ রাতেই দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মালদা জেলায় প্রবেশ করবে যাত্রা। তিনদিন ধরে মালদার বিভিন্ন অঞ্চলে যাত্রা চলবে। আগামী ৫ ডিসেম্বর তিনি ফের যাত্রায় যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন