CPIM: 'বাংলাকে বাঁচাতে বামপন্থার পুনরুত্থান চাই' - ২৯ নভেম্বর থেকে 'বাংলা বাঁচাও যাত্রা' CPIM-এর

People's Reporter: ২৯ নভেম্বর থেকে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হবে ‘বাঙলা বাঁচাও যাত্রা’। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ‘বাঙলা বাঁচাও যাত্রা’র ঘোষণা করেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম
সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম নিজস্ব চিত্র
Published on

বাংলা বাঁচাও যাত্রার ডাক দিল সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। আগামী ২৯ নভেম্বর কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগণা হুগলী, হাওড়া সহ সব জেলা ঘুরে ১৭ ডিসেম্বর কামারহাটিতে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র ঘোষণা করেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মূল যাত্রার পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও যাত্রা এসে মূল যাত্রায় মিশবে বলে তিনি জানিয়েছেন। যাত্রা চলাকালীন বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

কলকাতায় দলীয় রাজ্য দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম জানান কোচবিহার থেকে শুরু হয়ে এই যাত্রা শেষ হবে কলকাতায় ১৭ ডিসেম্বর। রাজ্যের সব জেলার মধ্যে দিয়ে ১৭ দিন ধরে এই 'যাত্রা' যাবে বলেও জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, বাংলাকে বাঁচাতে হবে, দেশ বাঁচাতে হবে।

সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য বলেন, বাংলাকে বাঁচাতে হলে বামপন্থার পুনরুত্থান দরকার। বামপন্থার পুনুরত্থান ঘটছে। বাংলা বাঁচাও যাত্রা সেকথা আবার প্রমাণ করবে। বামপন্থার পুনরুত্থান ঘটাতেই এই প্রচেষ্টা বলেও এদিন জানান মহম্মদ সেলিম।

এদিন তিনি বলেন, বাংলার মহিলারা না বাঁচলে রাজ্য বাঁচবে না। প্রতিদিন রাজ্য জুড়ে এই ধরণের ঘটনা ঘটছে। আগে আদিবাদী মহিলাদের মধ্যে এই ধরণের ঘটনা ছিল না। এখন আদিবাদী মহিলারাও এর শিকার হচ্ছে।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে স্লাইড শোয়ের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের দুরবস্থার কথা বলেন মহম্মদ সেলিম। স্লাইডের মাধ্যমে রাজ্যের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন শৃঙ্খলা, নারী নিরাপত্তা, কৃষি বিষয়ক অবস্থা তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা রাজ্যের মূল যে ইস্যু তা তুলে ধরার লক্ষ্যে এই যাত্রা। এই যাত্রাপথে তুলে ধরা হবে আঞ্চলিক দাবি, জেলার দাবি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে ভোটের অধিকার বাঁচলে তারপর তো ভোট হবে। কোন ইস্যুতে ভোট হবে সেটাই এই রাজ্যে এখন বড়ো প্রশ্ন। রাজ্যকে গড়ে তোলার জন্য নাকি রাজ্যকে ধ্বংস করার জন্য? কারণ এখানে এখন মানুষের অধিকার কেড়ে নেবার জন্য ভয় তৈরি করা হচ্ছে।

এদিন সেলিম বলেন, রাজ্যে কোনো লটারির টিকিট, কোনও সিল করা মদের বোতল বা পাউচ এ রাজ্যে ভাইপোকে তোলা না দিয়ে বিক্রি হতে পারেনা। এটা অসংখ্য পরিবারকে ভাঙছে। খেটে বাঁচার পথ নষ্ট করে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দক্ষিণপন্থীরা সব সময় মানুষের অধিকার সঙ্কুচিত করতে চায়। দেশ জুড়ে এবং আমাদের রাজ্যে দক্ষিণপন্থীদের শাসনে মানুষের অধিকার সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও প্রলোভন দিয়ে এই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এসআইআর নিয়ে কীভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়ক অডিও শোনান মহম্মদ সেলিম। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারাই শুনুন কীভাবে বিএলও-দের হুমকি দিচ্ছে শাসকদল। ওই অডিওতে শাসক দলের এক নেতাকে এক বিএলওকে হুমকি দিতে শোনা যায়। ওই নেতাকে না জানিয়ে কেন এসআইআর-এর কাজ শুরু করা হয়েছে? এই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, নির্বাচন কমিশন তাহলে ‘মকারি’ করছে? ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েকশো অভিযোগ এসেছে। এঁদের দায়িত্ব ইসিআই নেবে না? অসংখ্য মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যে তাঁরা ফর্ম পাচ্ছেন না।

এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোটার লিস্টে কারচুপি আছে। নাহলে তৃণমূলের ভয় কী ছিল? যেখানে সরাসরি বিএলও-র ভোটারকে ফর্ম দেবার কথা সেখানে দালাল ঢুকছে কেন? এখানেও সেটিং আছে। তৃণমূল বিজেপি ঠিক করে নিয়েছে কোথায় কীভাবে করা হবে। ভোটে যে দুর্নীতি হয় তাতে সকলেই যুক্ত। এই জন্যেই আমরা বলছি বাঙলা বাঁচাতে। গোটা এসআইআর নিয়ে নাটক করছে তৃণমূল, বিজেপি।

তিনি আরও বলেন, বিভাজন রুখতে, মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষা করতে, বাঙলা বাঁচাতে তৃণমূল বিজেপি বাদ দিয়ে সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সেখানে সবাইকে স্বাগত। সবাইকে সাথে নিয়েই ২০২৬-এ নতুন বাংলার জন্ম হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম
বিপর্যস্ত উত্তর! দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ঘরে ঘরে ত্রাণ নিয়ে সিপিআইএম, বাম ছাত্র যুব মহিলা সংগঠন
সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম
CPIM: ভোটের আগে বিজেপি সরকারকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে মোহন ভাগবতের কাশী মথুরা মন্তব্য - সিপিআইএম

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in