
আদালত কক্ষের ভিতরেই এক আইনজীবীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে ‘কুমন্তব্য’ করারও অভিযোগ ওঠে। যার ভিত্তিতে কল্যাণের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন 'আক্রান্ত' আইনজীবী। যদিও এই অভিযোগের পাল্টা ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কল্যাণ।
অভিযোগকারী ওই আইনজীবীর নাম অশোককুমার নাথ। বৃহস্পতিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় কল্যাণের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। আইনজীবী নিজের অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, ১২ বছর ধরে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি প্র্যাকটিস করছেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চে ১১ নম্বর আদালত কক্ষে কল্যাণের সঙ্গে বচসায় জড়ান তিনি।
অশোককুমার তাঁর অভিযোগপত্রে জানান, ‘‘কল্যাণ আদালতকক্ষে প্রবেশ করেন এবং সাংসদ সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করতে শুরু করেন। আমি তাঁকে বলি, আদালতকক্ষের মধ্যে এ সব না করতে। তিনি এতে রেগে যান এবং আমার কলার ধরে মারধর করেন। আমার মুখে ঘুষি মারেন, লাথি মারেন। আমার মুখ থেকে রক্ত পড়ছিল। কল্যাণ আমার বিরুদ্ধেও কুমন্তব্য করেন। অন্যেরা ওঁকে না আটকালে আমাকে উনি মেরেও ফেলতে পারতেন”।
এরপর সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, ‘‘আমি সৌগত রায়ের সমর্থক। তাঁর সংসদীয় এলাকার বাসিন্দা। সে দিন ১১ নম্বর আদালতকক্ষে কল্যাণ ছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর আমলে জঙ্গি হামলা নিয়ে বাকিদের সঙ্গে উনি কথা বলছিলেন। আমি শুধু সেখানে বলেছিলাম, আপনি সৌগতদার নামে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন কেন? তখনই উনি হিংসাত্মক হয়ে ওঠেন এবং আমাকে আক্রমণ করেন”।
তিনি আরও জানান, “আমাকে সৌগতের চামচা বলেন। আমার গাল থেকে রক্ত পড়ছিল। এখনও সেই দাগ আছে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আদালতেও জানিয়েছি। আর যেখানে যেখানে জানানো দরকার, আমি জানাব। আদালতের মধ্যে একজন বর্ষীয়ান আইনজীবীর সাথে এই ধরনের আচরণ কাম্য নয়”।
এবিষয়ে কল্যাণ এক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “কাল কোর্টে বসেছিলাম। তখন ওই আইনজীবী এসে দলের নানা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করছিলেন। আমি বারণ করলেও সেটা শোনেননি। আমাকে প্ররোচনা দেওয়া হয়। তখন আমি ওঁকে ঠেলে সরিয়ে দিই। মারধর করা এসব ফালতু কথা”।
কল্যাণের অভিযোগ, “বিজেপির কিছু লোকের কথায় ও এসব কাছ করেছে। সুইজারল্যান্ডের পাসপোর্ট হারিয়ে বিপাকে পড়লে, আমিই বিজেপির ওই আইনজীবীকে উদ্ধার করেছিলাম”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন