আপনারা ক্রিসমাসে লাইটিং নিয়ে গর্ব করুন - স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

People's Reporter: প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনারা ক্রিসমাসে লাইটিং নিয়ে খুব গর্ববোধ করেন। মানুষ যখন চিকিৎসা পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান তখন কারুর নজর পড়ে না”।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমফাইল ছবি,
Published on

রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতির।

হাসপাতালকে জমি দেওয়া এবং আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনারা ক্রিসমাসে লাইটিং নিয়ে নিজেদের জাহির করার চেষ্টা করেন, খুব গর্ববোধ করেন। কিন্তু মানুষ যখন চিকিৎসা পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান, তখন কারুর নজর পড়ে না”।

সোমবার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে রাজ্যকে কার্যত তিরস্কার করেছেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতির মন্তব্য, “আমাদের কাজ আটকে যায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে। এব্যাপারে রাজ্যের প্রধান সচিব কিছু বললে আমি বিশ্বাস করব না। তাঁর উপরে কেউ থাকেন যিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তা না হলে ১৯৭৬ সাল থেকে চন্দনগরে একটি ১০ শয্যার হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো যায় না!”

প্রধান বিচারপতির এজলাসে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মামলাটিতে আবেদনকারী জানান, তাঁর দাদু ১৯৭৬ সালে ৩০ বিঘা জমি একটি হাসপাতাল করার জন্য দান করেছিলেন। সেখানে একটি ১০ শয্যার হাসপাতালও তৈরি হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত তার শয্যা সংখ্যা আর বাড়ানো হয়নি। এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “চন্দনগরে কোনও মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল আছে? আমি জানি নেই। সেখানকার মানুষ প্রতিদিন কলকাতায় আসেন। যেখানে হাসপাতালই নেই, সেখানে আপনারা বলছেন হেরিটেজ শহর তৈরি করবেন”।

এরপরেই রাজ্যের সরকারি আইনজীবী অনিবার্ণ রায়কে উদ্দেশ্যে করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “চন্দননগর থেকে সময়মতো কলকাতায় পৌঁছানোর পরিবহনের ব্যবস্থা করুন। একবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া যান বুঝতে পারবেন কী অবস্থা। আমার শহর চেন্নাইয়ে আসুন। দেখুন সেখানকার চিকিৎসকরা মানুষের সঙ্গে কীরকম ব্যবহার করছেন”।

এরপরেই সুন্দরবনের পরিস্থিতি নিয়ে বিচারপতি বলেন, “সুন্দরবন এলাকায় একবার যান। সেখানকার মানুষের এখনও ভরসা নৌকা। একটা ১৫ থেকে ২০ দিনের শিশুকে কীভাবে চিকিৎসার জন্য দূরে কোথায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে? খুবই দুঃখজনক আপনাদের কাজ। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ছোট ছোট কাজগুলি করা যায় না? এখনও রাজ্যের বহু মানুষ কলকাতা দেখেনি। সেখানকার জিআই ট্যাগ নিয়ে গর্ব অনুভব করেন। কিন্তু সেখানকার মানুষদের দুঃখ, কষ্ট এমনকি বিক্ষোভের সময় কেউ যান না”।

এদিন প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, চন্দনগরের ওই স্থানে অন্তত ৫০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করতে হবে। এই হাসপাতাল তৈরি পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক নার্স নিয়োগ করা চলবে না বলে নির্দেশ আদালতের। নার্সদের সম্মানজনক বেতন দিতে হবে।  

প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম
আন্দোলনে নারাজ বিজেপি, এসএফআই আন্দোলন করে দাবি ছিনিয়ে আনছে - ক্ষোভ সন্ময় ব্যানার্জির
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম
Recruitment Case: সিবিআই মামলায় 'কালীঘাটের কাকু'র অন্তর্বর্তী জামিন হাইকোর্টে! তবে চলবে নজরদারি

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in