
নিয়োগের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন যখন তুঙ্গে, সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাফ জানিয়েছিলেন, আন্দোলন করলেই চাকরি পাওয়া যাবে না। তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সরাসরি ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধেই আদালতে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীষ জৈন।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন বিচারপতির তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে মণীষ বাবু জানান, অবৈধ উপায়ে যাদের নিয়োগ হয়েছিল, তাঁদের চাকরি বাঁচাতে ব্রাত্য বসুই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। মণীষের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসায় ইতিমধ্যেই যথেষ্ট অস্বস্তিতে তৃণমূল।
বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষাসচিব আরও জানান, অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে 'উপযুক্ত জায়গা' থেকে নির্দেশ এসেছিল। তার মধ্যে ব্রাত্য বসুও নির্দেশ দেন। তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন। এরপর আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে আমার কথা হয়। আইন দপ্তরেও আমি জানিয়েছিলাম বিষয়টি। এরপর স্কুল সার্ভিস কমিশনের সাথে কথা বলার পর মুখ্যসচিবকে বিষয়টি জানানো হয়। সেখান থেকে ক্যাবিনেটে বিষয়টি হস্তান্তর করা হয়।
"নিয়োগ সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে ও স্বচ্ছভাবে হবে। দুর্নীতিকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পূর্বে যা ভুল হয়েছে তা সংশোধন করা হচ্ছে। সকলেরই সহযোগিতা কাম্য। পাশাপাশি নতুন নিয়োগও আমাদেরকে চালু করতে হবে।" - এমনটাই জানিয়েছিলেন ব্রাত্য বসু। পাশাপাশি, নিয়োগ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার জন্য বিরোধী দলগুলিকেও দায়ী করেছিলেন তিনি।
কিন্তু রাজ্যের শিক্ষাসচিবের বিষ্ফোরক মন্তব্যের জেরে ফের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শাসক দলের আরও এক হেভিওয়েট মন্ত্রীর ভূমিকা কার্যত প্রশ্নের মুখে। এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ব্রাত্য বসুকে অবিলম্বে আদালতে ডাকতে হবে। এটা একটা অর্গানাইসড ক্রাইম। এখানে মন্ত্রী থেকে শুরু করে সচিব সকলেই যুক্ত রয়েছেন।"