সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় আলোচনা হল মাত্র ৫৬ মিনিট এবং ৭৫ মিনিট। শুক্রবারও সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন এদিনের মত মুলতুবি হয়ে গেছে। মূলত, আদানি কান্ড, মণিপুর এবং উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে হিংসার ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের আলোচনা এবং হট্টগোলের জেরে প্রায় প্রতিদিনই সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশনের কাজ ব্যাহত হয়েছে।
শুক্রবারেও লোকসভায় বিরোধী সদস্যরা প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন ওয়েলে নেমে আসেন। এরপর স্পিকার ওম বিড়লা সভা বেলা ১২টা পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন। সভা ফের শুরু হলে বিরোধী সাংসদরা আবারও ওয়েলে নেমে এসে নিজেদের দাবি জানাতে থাকেন। এরপরেই আজকের মত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন ওই সময় স্পিকারের চেয়ারে থাকা দিলীপ শইকিয়া।
এদিন রাজ্যসভাতেও আদানি ইস্যু, মণিপুর ইস্যু এবং সম্ভল ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে ১৭ জন সাংসদ নোটিশ জমা দেন। যদিও চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় কোনও আবেদনেই সাড়া না দিয়ে সমস্ত নোটিশ বাতিল করেন। এরপরেই সাংসদরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
জানা গেছে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিন সোমবার লোকসভায় অধিবেশন বসেছে ৬ মিনিট, বুধবার ১৬ মিনিট, বৃহস্পতিবার ১৪ মিনিট এবং শুক্রবার ২০ মিনিট।
একইভাবে সোমবার রাজ্যসভার অধিবেশন চলেছে ৩৩ মিনিট, বুধবার ১৩ মিনিট, বৃহস্পতিবার ১৬ মিনিট এবং শুক্রবার ১৩ মিনিট।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জয়রাম রমেশ এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) এদিন জানিয়েছেন, মোদানি ইস্যুতে আরও একটা দিন অধিবেশন বাতিল হয়ে গেল। সবথেকে বড়ো প্রশ্ন সরকার কেন এই মুলতুবি আটকাচ্ছে না। অন্যদিকে, সরকার ইন্ডিয়া মঞ্চের সদস্য দলগুলির বিরুদ্ধে মণিপুর, সম্ভল, দিল্লির আইন শৃঙ্খলার মত বিষয়ে আগ্রাসন দেখাচ্ছে।
যদিও শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহে বারবার দুই কক্ষের অধিবেশন মুলতুবি হলেও ইন্ডিয়া মঞ্চের ঐক্যও অটুট নেই। বিশেষ করে আদানি ইস্যুতে ইন্ডিয়া মঞ্চের অন্যান্য শরিকরা সরব হলেও তৃণমূল তা থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখেছে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হয়নি। অন্যদিকে আদানি ইস্যুর চেয়েও সম্ভল ইস্যুতে সমাজবাদী পার্টি বেশি সরব হয়েছে উত্তরপ্রদেশের কথা মাথায় রেখে।
অধিবেশন মুলতুবি বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেন, এই ধরণের ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে এবং রাজ্যসভায় ইতিমধ্যেই তিন দিন নষ্ট হয়েছে। যে সময়ে বহু আলোচনা করা যেত।
তিনি আরও বলেন, “রুল ২৬৭ (অন্যান্য কাজ স্থগিত করে কোনও বিষয়ে অবিলম্বে আলোচনার জন্য) আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা এবং বিঘ্ন সৃষ্টি করার একটি প্রক্রিয়া হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে বহু সিনিয়র সদস্য আছেন। এই বিষয়টি মেনে নেওয়া যায়না।
তিনি বলেন, “পুরো বিষয়টিতে আমার খুব খারাপ লাগছে এবং মনে হচ্ছে আমরা খুব খারাপ নজির তৈরি করছি। আমরা জনগণকেন্দ্রিক প্রত্যাশা পূরণ করছি না, আমরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছি, আমরা কার্যত হাসির পাত্রে পরিণত হচ্ছি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন