
সোমবার রাতে আচমকাই উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনখড়। পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি কে হবেন তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। সোমবার থেকেই বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে। তাই দ্রুত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে চাইছে সরকার। তালিকায় প্রথম যে নামটি উঠে আসছে - রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সাথে দেখাও করেছেন তিনি, যা জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে।
এনডিএ সূত্রে জানা গেছে, এই গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে এমন কাউকে আনা হবে যিনি বিতর্কহীন, অভিজ্ঞ এবং সাংবিধানিক রীতিনীতি মেনে চলতে সক্ষম। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে জানান, “আমরা এমন কাউকে চাইছি যিনি দলের পাশাপাশি দেশের উচ্চপদস্থ দায়িত্বে আস্থা অর্জন করতে পারবেন।”
এই মুহূর্তে হরিবংশ নারায়ণ সিং উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন। জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর এই নেতা রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে পদে রয়েছেন।
তবে ধনখড়ের (পূর্বে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন) মতোই ফের কোনও রাজ্যপালকে উপরাষ্ট্রপতি পদে আনার ভাবনাও রয়েছে। এছাড়া সংসদীয় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনও কেন্দ্রীয় নেতা যিনি বিতর্কের বাইরে থাকেন তাঁকেও উপরাষ্ট্রপতি করা হতে পারে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ধনখড় এবং তার পূর্বসূরি এম. ভেঙ্কাইয়া নাইডু উভয়েই ছিলেন বিজেপির অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ।
সংবিধানের ৬৮(২) ধারা অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হওয়ার পর “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব” নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ রয়েছে। নতুন নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি ৫ বছরের পূর্ণ মেয়াদেই পদে থাকবেন।
যেহেতু উপরাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সেই দায়িত্ব কে সামলাবেন তা নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। সাধারণত, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান বা রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত অন্য কোনও সদস্য অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতের উপরাষ্ট্রপতির যোগ্যতা হল - উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে হতে হবে একজন ভারতীয় নাগরিক, কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়সী এবং রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচনের জন্য যোগ্য। এছাড়া তিনি কোনও লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে অগস্ট মাসে উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন ধনখড়। বিরোধী প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে ছিলেন তিনি। এখনও দুই বছর তাঁর ক্ষমতায় থাকার কথা ছিল।
ধনখড়ের আচমকা ইস্তফার সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ সোমবারও রাজ্যসভায় অধ্যক্ষ হিসাবে অধিবেশন পরিচালনা করেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে ইস্তফার কথা জানান তিনি।
৭৪ বছরের এই রাজনীতিবিদ রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে লেখেন, "নিজের স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে চাই আমি। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার জন্য সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করছি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন