
বৃহস্পতিবার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে আমেদাবাদের মেঘানীনগরে। যেখানে বিমানকর্মী-সহ মৃত্যু হয়েছে ২৪১ জনের। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন একজন যাত্রী। এই মৃতের তালিকায় রয়েছেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও। লন্ডনে মেয়ের কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে গুজরাট পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১:৩৯ মিনিটে রানওয়ে ২৩ থেকে উড়ান শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আহমেদাবাদের মেঘানীনগর আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়ে ফ্লাইট AI-171। লোকালয়ের উপর ভেঙে পড়ায় বহু স্থানীয়ের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট ছিলেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
কী কারণে ঘটল এহেন বিমান দুর্ঘটনা? ব্ল্যাক বক্সের তদন্ত চলছে। তবে এখনও দুর্ঘটনার নিশ্চিত কারণ জানা যাচ্ছে না। একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে দুর্ঘটনার (সেই সমস্ত ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)। আর যা দেখে কী কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা চারটি কারণ তুলছেন। সেগুলি হল -
প্রথমত, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে বিমানটির ভার এবং সেই সংক্রান্ত গবেষণার ত্রুটি। কারণ তাঁরা মনে করছেন, বিমানটি ওড়ার সময় যাত্রী, মালপত্র-সহ বিমানের ওজন কত ছিল, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওড়ার মুখে ওই ওজনের হিসেবে গোলমাল করে ফেলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা।
যেকোনো বিমানের গঠন অনুযায়ী তার নির্দিষ্ট ভারবহন ক্ষমতা থাকে। বিমানের যাত্রীদের কোথায় বসানো হবে, কোন দিকে কত যাত্রী বসলে বিমানের সামনে এবং পিছনের দিকের ভারসাম্য বজায় থাকবে, বিমান ওড়ার আগে তা হিসেব করতে হয়। সেক্ষেত্রেই হিসেবে ভুল হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্বিতীয়ত, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি থাকতে পারে। মনে করা হচ্ছে, ল্যান্ডিং গিয়ারটি ওড়ার পর ঠিকঠাক ভাবে বন্ধ হয়নি। এই ল্যান্ডিং গিয়ারের উপরেই পুরো বিমানের ভার নিয়ন্ত্রণ করে। ওঠানামার সময় রানওয়ের সংস্পর্শে আসে ল্যান্ডিং গিয়ার। এখান থেকে বিমানের চাকা বেরিয়ে আসে। বিমানের গতিও ল্যান্ডিং গিয়ারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
তৃতীয়ত, অনেকে মনে করছেন, মাটি ছেড়ে উপরের দিকে ওঠার ক্ষমতা (লিফট) কমে এসেছিল। একসময় যা পুরোপুরি শেষ হয়ে আসে। যার ফলে বিমানটি ভাসিয়ে রাখতে পারেননি পাইলট। ভাইরাল ভিডিও দেখে অনেকে মনে করছেন, রানওয়ে ছাড়ার পর বিমানটি মাঝপথে সামান্য গোঁত্তা খেয়েছিল। লিফ্ট কমে যাওয়ার কারণেই এমন ঘটেছে।
চতুর্থত, বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানটির ইঞ্জিনে ত্রুটি ছিল। ভেঙে পড়ার আগে সর্বোচ্চ গতি ছিল ৩২২ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। যা স্বাভাবিক নয় বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ওই সময় বিমানের গতি আরও বেশি থাকার কথা। কোনও কারণে বিমানের ইঞ্জিন শক্তি হারিয়ে ফেলায় এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমানটি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন