
পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ ১০০ দিনের কাজের টাকা এখনও রাজ্যের তহবিলে না ঢোকা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হল। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত রাজ্যের হিসেব দিলেও পশ্চিমবঙ্গের নাম উল্লেখ করেনি বলে অভিযোগ করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের দাবি কেন্দ্র ইচ্ছাকৃত ভাবে পশ্চিমবঙ্গের সাথে রাজনীতি করছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, মনরেগা একটি ‘চাহিদানির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্প’ এবং চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪–২৫) এখনও পর্যন্ত ৪৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের নাম না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতারা।
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে যেখানে MGNREGA-তে নথিভুক্ত পরিবার ছিল ১৪.৮১ কোটি, ২০২৪-২৫-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৯৯ কোটিতে। কিন্তু গড় কর্মদিবস কমেছে - ৫২.০৮ দিন থেকে ৫০.২৩ দিনে। মোট শ্রমিকের সংখ্যাও কমেছে। ৮.৩৪ কোটি থেকে ৭.৮৮ কোটিতে নেমেছে।
রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “এই জবাব দেখে আমরা হতবাক। ৩৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তালিকা দেওয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই! বাংলাকে কি মানচিত্র থেকে বাদ দেওয়া হলো?” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে পেরে উঠতে না পেরে বাংলার বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।”
তৃণমূল শিবিরের দাবি, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনে একের পর এক পরাজয়ের বদলা নিতে কেন্দ্র এই প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমনকি বাংলা ও বাঙালিদের প্রতি বিদ্বেষের রাজনীতি করছে বিজেপি সরকার।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, আগামী ১ আগস্ট থেকে ১০০ দিনের কাজ আবার শুরু করতে হবে। কেন্দ্র চাইলে দুর্নীতি রোধে নজরদারি চালাতে পারে, কিন্তু প্রকল্প অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখতে পারে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন