
ব্যায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি) –এর গুণমানের নিরিখে কুম্ভমেলার ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাটের জল স্নানের উপযুক্ত নয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এই রিপোর্ট দিয়েছিল, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল পরিবেশ আদালত। এমনকি এই নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ব্যাখ্যা চেয়েছিল পরিবেশ আদালত। কিন্তু বুধবার সেই দাবি উড়িয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ত্রিবেণী সঙ্গমের জল স্নানযোগ্যই শুধু না, পানযোগ্যও বটে।
গত ১৩ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হয়েছে কুম্ভমেলা। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ঠিক তারপরেই ত্রিবেণী সঙ্গমের জল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১২ থেকে ১৩ জানুয়ারি প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমের জল নিয়ে একাধিকবার পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গেছে, নদীর জলের গুণমান জৈব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (BOD)-এর মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বিভিন্ন সময় ওই স্থানের গঙ্গার জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাট নয়, ওই এলাকার কোনও ঘাটের জলই স্থানের উপযুক্ত নয়।
এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিরোধীরা সমালোচনা শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের। বুধবার বিধানসভায় বিরোধীদের সমালচনার জবাব দেন যোগী। তিনি বলেন, “কুম্ভমেলায় এখনও পর্যন্ত ৫৬ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী স্নান করেছেন। কোনও ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করার অর্থ ওই ৫৬ কোটি মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে খেলা করা”।
তিনি বলেন, বুধবার ত্রিবেণী সঙ্গমের কাছে গঙ্গায় বিওডির মাত্রা লিটারপিছু তিন মিলিগ্রামের কম ছিল। ডিজলভ্ড অক্সিজেন (ডিও)-র মাত্রা লিটারপিছু ৮-৯ মিলিগ্রামের মধ্যে ছিল। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর মানে সঙ্গমের জল শুধু স্নানযোগ্যই নয়, ‘আচমন’ (পবিত্র জল পানের রেওয়াজ)-এরও যোগ্য”।
মূলত, নিকাশি বর্জ্য থেকে জল দূষিত হচ্ছে কিনা, সেটা বোঝা যায় ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থেকে। প্রতি ১০০ মিলিমিটার জলে সর্বাধিক ২৫০০ ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের নির্ধারিত সীমায় সেটাই উল্লেখ আছে। বর্তমানে ত্রিবেণী সঙ্গমের জলে এর থেকে বেশী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ ফিকাল কলিফর্ম পাওয়া গিয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন