
প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা নিয়ে এবার সরব হলেন উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষ পীঠের ৪৬ তম শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে 'অব্যবস্থার' অভিযোগ তুললেন তিনি।
মহাকুম্ভে যানজট, বারবার অগ্নিকান্ড, পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা থেকে শুরু করে নদীর জলে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ সবকিছু নিয়েই মুখ খুললেন স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, '৩০০ কিলোমিটার যানজট ছিল। যদি এটি অব্যবস্থাপনা না হয়, তাহলে কী? মানুষকে তাদের লাগেজ নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়েছিল। স্নানের জলে নর্দমার জল মিশে যাচ্ছে এবং বিজ্ঞানীরা এটিকে স্নানের জন্য উপযুক্ত মনে করেন না, তবুও কোটি কোটি মানুষকে এতেই স্নান করতে বাধ্য করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, '১২ বছর আগেই জানতেন যে ১২ বছর পর মহাকুম্ভ আয়োজন করা হবে। কিন্তু তারপরেও এই অব্যবস্থা হল কী করে? ড্রেনগুলি বন্ধ করে দিতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি। যখন আগে থেকেই জানা ছিল যে এত লোক আসবে এবং জায়গা সীমিত, তখন এর জন্য একটি পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। আপনি কোনও পরিকল্পনা করেননি। কেবল মিথ্যা প্রচারণা ছড়িয়ে গিয়েছেন। ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ বলে যে প্রচার করা হচ্ছে তাও মিথ্যা দাবি। ভিড় নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। মানুষ মারা যাচ্ছে তার তথ্যও লোপাট করার চেষ্টা হয়েছিল। যা একটি গুরুতর অপরাধ।'
অন্যদিকে, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মহাকুম্ভের বিপর্যয় নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, 'মহাকুম্ভ এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গেছে। সে রাজ্যের প্রশাসন ঠিক মতো ব্যবস্থা করেনি। যার কারণে এই বিপর্যয় হয়েছে।'
মমতা ব্যানার্জির এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁকে 'সনাতন বিরোধী' বলে আক্রমণ করেছে বিজেপি। অখিল ভারতীয় সন্ত সমিতির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক স্বামী জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতীও মমতা ব্যানার্জিকে কটাক্ষ করে বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা এবং পূর্ব ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে হিন্দুরা যেভাবে অমৃত স্নানের জন্য আসছেন তাতে মমতা ব্যানার্জি অস্থির বোধ করছেন। আমি মনে করি পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য মৃত্যুকুম্ভ হিসেবে প্রমাণিত হবে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন